বাংলা সাহিত্যের বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে স্মরণে সিডনিতে অনুষ্ঠিত হলো নজরুলসংগীত ও সাংস্কৃতিক আয়োজন “ভালোবাসো মোর গান”।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) ক্যাম্বেলটাউন আর্টস সেন্টারের পারফরম্যান্স হলে আয়োজিত এ অনুষ্ঠান নজরুলপ্রেমীদের জন্য হয়ে ওঠে এক আবেগঘন সন্ধ্যা। তিন ঘণ্টাব্যাপী এ আয়োজনটি ছিল রাজন নন্দীর গ্রন্থনা, প্রাণবন্ত উপস্থাপনা ও দক্ষ নির্দেশনায় সাজানো এক চমৎকার শিল্পমেলা। শুরুতেই রিখিয়ার কোরিওগ্রাফি ও নৃত্যের মাধ্যমে পরিবেশিত ক্লাসিক্যাল পরিবেশনা দর্শকদের মুগ্ধ করে।
প্রধান শিল্পী হিসেবে বাংলাদেশ বেতারের শিল্পী ও সিডনিপ্রবাসী লামিয়া আহমেদ লুনিয়া নজরুলসংগীত পরিবেশন করেন। তার দরাজ ও সুরেলা কণ্ঠ শ্রোতাদের বিমোহিত করে রাখে। অসুস্থতা সত্ত্বেও উপস্থিত ছিলেন তার বড় বোন, সিডনির পরিচিত শিল্পী “বাউলকন্যা” ফারিয়া আহমেদ, যিনি শ্রোতাদের ভালোবাসায় আবেগঘন মুহূর্ত তৈরি করেন।
সহশিল্পীদের মধ্যে গান পরিবেশন করেন প্রিয় শিল্পী বনফুল ও জনপ্রিয় কণ্ঠ নিলাদ্রী। নৃত্যে অর্পিতা সোম চৌধুরীর পরিবেশনা দর্শক মাতায়। বিশেষ আকর্ষণ ছিল অর্পিতা ও নাভেরা কবীরের যুগল নৃত্য “জাগো নারী জাগো বন্হি শিখা”। কবিতা আবৃত্তি ও অভিনয়ে শাকিল চৌধুরী নিজের স্বকীয়তা দিয়ে অনুষ্ঠানে আলাদা মাত্রা যোগ করেন। বাদ্যযন্ত্রে ছিলেন বিজয় সাহা (তবলা), আলী কাওসার (অক্টোপ্যাড), বনফুল (গিটার) ও নিলাদ্রী (কী-বোর্ড)।
বিশেষ পর্বে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয় নজরুলসংগীতের বরেণ্য শিল্পী ইলা সিরাজকে। তিনি ১৯৭০-এর দশকে কবি নজরুলের নিজ বাড়িতে গিয়ে গান শোনানোর বিরল অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিলেন। এ সময় বিশিষ্ট কলামিস্ট ও লেখক অজয় দাশগুপ্ত নজরুলের সাম্যবাদী চেতনা ও কর্ম নিয়ে আলোচনায় অংশ নেন। ফটোগ্রাফিতে ছিলেন কবির উদ্দিন, ভিডিওগ্রাফিতে পাপ্পু, আর ব্যাকস্টেজে সহায়তা করেন সুমন কবীর, শহিদুজ্জামান সুমন, আবরার ও জাকী খন্দকার। শেষে লামিয়া আহমেদ নজরুলের জনপ্রিয় গান “তবু আমাকে দেব না ভুলিতে” পরিবেশন করলে অনুষ্ঠানটির সমাপ্তি ঘটে।
এই আয়োজনে অতিথি ছিলেন ক্যাম্বেলটাউন সিটির কাউন্সিলর মাসুদ চৌধুরী ও আশিকুর রহমান অ্যাশসহ সিডনির বহু সাংস্কৃতিক, সাহিত্যিক ও সমাজকর্মী। শতাধিক দর্শক-শ্রোতার উপস্থিতিতে সন্ধ্যাটি হয়ে ওঠে প্রবাসী বাঙালিদের এক স্মরণীয় মিলনমেলা।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ