বিস্ফোরক দাবি ঘিরে আবারও আলোচনা। আর সেই দাবিটি করেছেন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র সাবেক কর্মকর্তা রিচার্ড বার্লো। তিনি জানিয়েছেন, আশির দশকে পাকিস্তানের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা রুখতে সে দেশের কাহুতা ইউরেনিয়াম এনরিচমেন্ট প্ল্যান্টে ভারত ও ইসরায়েল একটি যৌথ বিমান হামলার গোপন পরিকল্পনা করেছিল। তার মতে, তৎকালীন ভারত সরকার সেই অপারেশনে অনুমোদন না দেওয়ায় অনেক সমস্যার সমাধান করা যায়নি এবং এটি ছিল এক লজ্জার বিষয়।
কাউন্টারপ্রলিফারেশন অফিসার হিসেবে আশির দশকে পাকিস্তানের গোপন পারমাণবিক কর্মকাণ্ডের ওপর নজরদারি করা বার্লো সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নিশ্চিত করেন, তিনি গোয়েন্দা মহলে এই পরিকল্পনার কথা শুনেছিলেন। তবে সরাসরি তিনি এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। তিনি বলেন, ইন্দিরা [গান্ধী] যে এটিকে অনুমোদন দেননি, তা সত্যিই লজ্জার; এতে বহু সমস্যার সমাধান হতে পারত।
বিভিন্ন প্রতিবেদন ও ডিক্লাসিফাইড নথি অনুযায়ী, পাকিস্তান যাতে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি ও তা বিশেষ করে ইসরায়েলের ঘোর শত্রু ইরানের কাছে ছড়িয়ে দিতে না পারে, সেজন্য ভারত ও ইসরায়েল পাকিস্তানের পারমাণবিক কর্মসূচির মূল কেন্দ্র কাহুতা ইউরেনিয়াম এনরিচমেন্ট প্ল্যান্টে বিমান হামলার ছক কষেছিল।
বার্লো আরও উল্লেখ করেন, সেই সময়কার মার্কিন প্রশাসন, প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগানের অধীনে এই ধরনের হামলার তীব্র বিরোধিতা করত। বিশেষ করে ইসরায়েলের দিক থেকে এমন হামলা এলে তা আফগানিস্তানে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে আমেরিকার গোপন যুদ্ধ প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করতে পারত। বার্লোর দাবি, পাকিস্তান এই নির্ভরতাকে কাজে লাগিয়েছিল এবং হুমকি দিয়েছিল যে সাহায্য বন্ধ হলে তারা আফগানিস্তানে সহযোগিতা করবে না।
বার্লো ব্যঙ্গ করে বলেন, রিগান নিশ্চিতভাবে মেনাখেম বেগিনের [তৎকালীন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী] হাত কেটে নিতেন, যদি তিনি এমন কিছু করতেন। কারণ এটি আফগান সমস্যার মধ্যে হস্তক্ষেপ করত।
আব্দুল কাদির খানের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত কাহুতা এনরিচমেন্ট ফ্যাসিলিটিই পরবর্তীতে পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। ১৯৯৮ সালে ইসলামাবাদ সফলভাবে পারমাণবিক পরীক্ষা সম্পন্ন করে। বার্লোর এই দাবি আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলে ফের এক চাপা উত্তেজনা সৃষ্টি করল।
সূত্র: এনডিটিভি
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল