বাংলাদেশি আজহারী ছাত্রসমাজের ঐক্য, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশন, মিশর-এর আয়োজিত ‘ইত্তিহাদ বার্ষিক অনুষ্ঠান ২০২৫’। গত ২৭ অক্টোবর আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাস, নাসর সিটির কুল্লিয়াতুত তারবিয়া প্রাঙ্গণে এই শৃঙ্খলাপূর্ণ ও বর্ণাঢ্য শপথগ্রহণ ও বিদায়ী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
বছরের অন্যতম প্রতীক্ষিত ও অনুপ্রেরণামূলক এই আয়োজনে নবীন–প্রবীণ, বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে এক অনন্য মঞ্চ তৈরি করেন, যেখানে প্রবাসের মাটিতেও তারা অনুভব করেন এক টুকরো বাংলাদেশের উষ্ণতা। উৎসবমুখর এই অনুষ্ঠানে প্রায় ৮০০-এর বেশি শিক্ষার্থী, তাদের পরিবার ও শিশু-কিশোররা অংশগ্রহণ করেন। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সকলের মিলন ঘটায় অনুষ্ঠানে ছড়িয়ে পড়ে প্রীতি, ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের উচ্ছ্বাস।
আয়োজকদের মতে, বিপুল উপস্থিতি প্রমাণ করে বাংলাদেশি আজহারী সমাজের গভীর বন্ধন ও সংহতির প্রতিচ্ছবি।
কৃতী শিক্ষার্থীদের সম্মাননা
অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল কৃতী শিক্ষার্থীদের সম্মাননা পর্ব। এতে ১২টি দেশের প্রতিনিধি এবং পিএইচডি, মাস্টার্স, গ্র্যাজুয়েট, আওয়ায়েল, মুমতাজ ও জায়্যিদ জিদ্দান ডিগ্রি অর্জনকারী প্রায় ২৩০ জন শিক্ষার্থীকে ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়। এই সম্মাননা শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত অর্জনের পাশাপাশি পুরো বাংলাদেশি আজহারী সমাজের অধ্যবসায়, মেধা ও সাফল্যের প্রতিফলন ঘটায়।
নেতৃত্বের পালাবদল
অনুষ্ঠানের আরেক গুরুত্বপূর্ণ পর্ব ছিল দায়িত্ব হস্তান্তর ও নতুন নেতৃত্ব ঘোষণা। এতে ২০২৪–২০২৫ সেশনের কার্যনির্বাহী কমিটি বিদায় নেয় এবং ঘোষণা করা হয় নতুন ২০২৫–২০২৬ সেশনের কার্যনির্বাহী কমিটি। আবেগ ও কৃতজ্ঞতায় ভরা এই মুহূর্তে নতুন নেতৃত্ব বিদায়ী কমিটির অভিজ্ঞতা ও দিকনির্দেশনা থেকে অনুপ্রেরণা গ্রহণ করে ভবিষ্যতের পথচলার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে। এই নেতৃত্ব পরিবর্তন আজহারী সমাজে ধারাবাহিকতা ও ঐক্যের প্রতিশ্রুতি নবায়ন করে।
পারিবারিক ও সামাজিক পরিবেশ
অনুষ্ঠানে ছিল মনোজ্ঞ আলোচনা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা এবং পারিবারিক সৌহার্দ্যের নানা দৃশ্য। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি তাদের পরিবার, স্ত্রী ও সন্তানদের অংশগ্রহণ পুরো আয়োজনকে দেয় এক সামাজিক ও পারিবারিক আবহ।
দোয়া ও মোনাজাতের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হয় ‘ইত্তিহাদ বার্ষিক অনুষ্ঠান ২০২৫’। বাংলাদেশ স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশন, মিশর (সেশন ২০২৪–২০২৫)-এর এই আয়োজন প্রবাসে বাংলাদেশি আজহারী সমাজের ঐক্য, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার এক গৌরবময় প্রতীক হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
বিডি-প্রতিদিন/জামশেদ