জামায়াতে ইসলামীকে উদ্দেশ্য করে চিকিৎসক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. সাখাওয়াত হোসেন সায়ন্থ বলেছেন, এটা জামায়াতে ইসলামীর জন্য শুভ লক্ষণ নয়। ঘি খাওয়ার ইচ্ছে হলে কেন পুরনো রীতিতে আঙুল বাঁকিয়ে ঘি তুলে খেতে হবে? আঙুল চাটতে হবে কেন? যদি চাটার ইচ্ছে থাকে তবে তা গোপনে করুন; আর আধুনিকভাবে খেতে চাইলে চামচ ব্যবহার করে ভদ্রভাবে খান। এই ধরনের চাটাচাটি করে ঘি খেয়ে জাতিকে নষ্ট করা ঠিক হচ্ছে না। এসব মূলত উত্তেজক কথা।
সম্প্রতি এক বেসরকারি টেলিভিশনে টক শো অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তিনি আরও বলেন, জামায়াতের উত্তেজনা এমন পর্যায়ে উঠে গেছে যে ‘নো হাংকি-পাংকি’-এই ধরনের শব্দের ব্যবহার অনায়াসে তারা বলে যাচ্ছে। জামায়াত বর্তমানে অত্যন্ত দম্ভান্বিত আচরণ করছে। তারা বলছে- যদি ১১ তারিখের মধ্যে তাদের দাবি মেনে না নেওয়া হয়, তারা ১১ তারিখে ঢাকা শহর অচল করে দেবে।
তারা বলছে, ‘মানুষ অন্য ঢাকা শহর দেখবে’- অথচ সেই ‘অন্য ঢাকা শহর’ জনগণ ভালোভাবে গ্রহণ করে না। বেসিক্যালি জামায়াতে ইসলামী এবং তার সঙ্গে থাকা কয়েকটি ধর্মভিত্তিক দল মিলে অনেকদিন ধরে একটি উত্তেজনা তৈরি করতে চাইছে।
তিনি আরও বলেন, যখন ঐকমত্য কমিশন নিয়ে আলোচনা চলছিল তখনই তারা একটি অপ্রাসঙ্গিক ও উদ্ভট ইস্যু নিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করে, যা ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় কখনো উঠেনি এবং এজেন্ডাতেও ছিল না। যদি তারা সরকার বা অন্য কোনো শক্তির ওপর চাপ সৃষ্টি করতে বিক্ষোভে নামেন তাহলে তা সংঘর্ষে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা আছে-ফলে নির্বাচনের পরিবেশ ব্যাহত হবে। মূলত এদের উদ্দেশ্য নির্বাচন পেছানো। কারণ যতদিন নির্বাচন পিছিয়ে থাকবে, তারা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে তাদের দখল ও সুবিধা ধরে রাখতে পারবে।
সায়ন্থ বলেন, জামায়াত একটি ক্যাডারভিত্তিক ধর্মভিত্তিক দল। সেখানে চেইন অব কমান্ড রয়েছে। তাই দলের ভেতরে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর তাতে প্রকাশ্যভাবে বিরোধ বা বিভ্রম থাকে না। অন্যদিকে বড় দলগুলোতে- যেমন বিএনপি সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া এবং নেতাকর্মীদের প্রতিক্রিয়া ভিন্ন। সময় যত বাড়বে তত বিএনপির জনপ্রিয়তায় প্রভাব পড়তে পারে। আর জামায়াত চাচ্ছে এই সুযোগটা নিতে।
সায়ন্থ মনে করেন, এখন আর ফেব্রুয়ারির পরে নির্বাচনের পেছানোর সুযোগ নেই। বিভিন্ন দল প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়া অনেকদূর এগিয়ে গেছে। ফলে জামায়াত বিভিন্ন ইস্যু তুলে নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করলে তা সফল হবে না। কেবল মাঠ উত্তপ্ত হবে এবং উত্তেজনা সৃষ্টি হবে, কিন্তু নির্বাচনের বাধা সৃষ্টি করা সম্ভব হবে না। বিএনপি সংযম বজায় রেখেই তারা তাদের কৌশল অনুসরণ করছে এবং এগিয়ে যাচ্ছে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ