ফরিদপুরে মায়ের কোল থেকে নিয়ে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠা সেই শিশু তানহা আক্তারকে (১৪ মাস) মা পপি বেগমের জিম্মায় দিয়েছেন আদালত। আগামী ২ জুন পর্যন্ত শিশুটি মায়ের জিম্মায় থাকবে বলে আদালত নির্দেশ দেন।
সোমবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ফরিদপুরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট ফজলে রাব্বি এ নির্দেশ দেন। পরে শিশুটির মা পপি বেগমের কোলে তুলে দেয়া হয় শিশু তানহাকে। এ সময় সেখানে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। এর আগে শনিবার বিকালে শিশুটিকে ফরিদপুর র্যাব ক্যাম্পের একটি দল উদ্ধার করে নগরকান্দা থানায় হস্তান্তর করেন। পরবর্তীতে নির্দেশনা অনুযায়ী আদালতে হাজির করা হয় শিশুটিকে।
বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মোফাজ্জেল হোসেন জানান, মামলার বাদী পপি বেগম দীর্ঘদিন শিশুটিকে ফিরে পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়িয়েছেন। পরবর্তীতে আদালতের আদেশক্রমে র্যাব বাচ্চাটিকে উদ্ধার করে নগরকান্দা থানা পুলিশের মাধ্যমে আদালতে সোপর্দ করেন। আদালত ন্যায় বিচারের স্বার্থে শিশুটিকে তার মায়ের জিম্মায় দিয়েছেন। আশা করি আমরা ন্যায় বিচার পাব।
দুগ্ধপোষ্য শিশুকে ফিরে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন মা পপি বেগম। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, আমি আমার কলিজার টুকরাকে ফিরে পেয়েছি। আমি যেন আর হয়রানির শিকার না হই। আদালত যেন আমার কাছে আমার বাচ্চাকে ফিরিয়ে দেয়।
মামলার সূত্রে জানাযায়, গত তিন বছর আগে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের হান্নান সরদারের মেয়ে পপি বেগমের সাথে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার রামপাশা গ্রামের কাইয়ুম বিশ্বাসের বিয়ে হয়। এরপর সংসারে নানা ঝামেলার এক পর্যায়ে পপি বেগমের সঙ্গে কাইয়ুম বিশ্বাসের তালাক হয়ে যায়। এসময় স্বামী মো. কাইয়ুম বিশ্বাস তাদের ৭ মাস বয়সী শিশুকন্যা তানহাকে জোর করে নিজের কাছে রেখে দেন। পরে পপি একাধিক বার মেয়েকে আনতে গেলে সাবেক স্বামী শিশু তানহাকে দিতে অস্বীকৃতি জানান। এরপর পপি কোন সমাধান না পেয়ে গত বছরের ডিসেম্বর মাসে ফরিদপুর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। শিশুটির মা পপি বেগম অভিযোগ করে বলেন, তার সাবেক স্বামী কাইয়ুম বিশ্বাস ৭ মাস আগে তানহাকে এক প্রতিবেশীর কাছে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছিল। তারপর থেকেই সে তানহার কোন খোঁজ পাচ্ছিলেন না। পরে তিনি আদালতে মামলা করেন।
বিডি প্রতিদিন/এএম