বাংলাদেশে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে ভুয়া ও মিথ্যা তথ্যের ব্যবহার। গত জুন মাসে ৩২৪টি মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য শনাক্ত করেছে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস)। এর মধ্যে ২৫৩টিই রাজনৈতিক ভুয়া তথ্য- যা রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে জনমতকে প্রভাবিত করার একটি স্পষ্ট প্রচেষ্টার ইঙ্গিত দেয়। এ ছাড়া জুন মাসেই মিথ্যা তথ্যের টার্গেট হন ১২৪ জন রাজনৈতিক নেতা।
গতকাল সিজিএসের ভুয়া তথ্য সংক্রান্ত মাসিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ভুল তথ্য ছড়ানোর মাধ্যম হিসেবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে ব্যবহার করা হচ্ছে। এসবের মধ্যে রয়েছে ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক, থ্রেডস এবং এক্স (টুইটার) এর মতো প্ল্যাটফর্ম। তবে ৩২৪টি মিথ্যা তথ্যের মধ্যে ৩১৬টি ফেসবুকে শনাক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া অনলাইন নিউজ পোর্টাল থেকে শনাক্ত করা হয়েছে ৮টি ভুয়া তথ্য। সিজিএস শনাক্ত মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্যের মধ্যে ২৫৩টি রাজনৈতিক, ২৪টি বিনোদন-সেলেব্রিটি সংক্রান্ত, ১৯টি ধর্মীয়, ১৮টি অনলাইন হোক্স, ৫টি কূটনৈতিক, ৪টি অর্থনৈতিক এবং পরিবেশ-সংক্রান্ত একটি ভুয়া তথ্য শনাক্ত করা হয়। এর মূল টার্গেট ছিলেন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক নেতারা ১২৪ বার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ৪৮ বার এবং সেলেব্রিটিরা ২৫ বার মিথ্যা ও বিভ্রান্তমূলক তথ্যের শিকার হন। পাশাপাশি ধর্মীয় বিষয় সংক্রান্ত ১৬টি, রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে ১৩টি, সরকারি প্রতিষ্ঠান নিয়ে ১৬টি, অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে ৬টি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নিয়ে দুটি এবং ধর্মীয় ব্যক্তিকে নিয়ে একটি মিথ্যা তথ্য শনাক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া ৭৩টি ঘটনায় নির্দিষ্ট কাউকে লক্ষ্য করে করা হয়নি বরং সামগ্রিকভাবে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার জন্য করা হয়েছে। সিজিএস বলছে, ভুয়া তথ্যের অনিয়ন্ত্রিত প্রবাহ দেশের গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতাকে দুর্বল করে তুলবে। যা জনগণের আস্থা এবং ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সুনামকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। সরকারি, বেসরকারি, প্রযুক্তিগত ও সামাজিক স্তরে সুসংগঠিত পদক্ষেপ ছাড়া ভুয়া তথ্যের অনিয়ন্ত্রিত প্রবাহ রোধ করা সম্ভব নয়। এজন্য বাংলাদেশকে ভুয়া তথ্যরোধে ডিজিটাল সুশাসন গ্রহণ করতে হবে। বিভিন্ন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং জনসচেতনতা বাড়াতে দেশব্যাপী গণমাধ্যম-সাক্ষরতার ওপর বিনিয়োগ করতে হবে।