আজ ১৪ মার্চ শুক্রবার জুমাবার। আবার একই দিন হিন্দু সম্প্রদায়ের হোলি উৎসব। উত্তর প্রদেশের সম্ভাল থানা এলাকায় যে স্থান দিয়ে হোলির শোভাযাত্রা বের হবে সেই স্থানে অবস্থিত ১০টি মসজিদ প্লাস্টিক শিট এবং ত্রিপল দিয়ে ঢেকে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ। যার মধ্যে রয়েছে ঐতিহাসিক জামা মসজিদও। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) শ্রীশচন্দ্র বলেন, উভয় সম্প্রদায়ের পারস্পরিক বোঝাপড়ার মধ্য দিয়ে ঠিক হয়েছে, হোলি শোভাযাত্রার ঐতিহ্যবাহী রাস্তাগুলোতে থাকা সব ধর্মীয় স্থান ঢেকে দেওয়া হবে।
সম্ভল উপ-বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট বন্দনা মিশ্র বলেন, উত্তর প্রদেশ পুলিশ ১ হাজার ১৫ জনকে আটক করেছে। তিনি আরও জানান ‘সম্ভলের বিভিন্ন মসজিদে তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের। ওই জেলাকে কয়েকটি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। আমরা হোলির জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত এবং এটি যেন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয় তা নিশ্চিত করব।’
যে ১০টি মসজিদকে প্লাস্টিক এবং ত্রিপল দিয়ে ঢেকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে সেগুলি হলো শাহি জামা মসজিদ, লাদানিয়া ওয়ালী মসজিদ, থানে ওয়ালি মসজিদ, এক রাত মসজিদ, গুরুদোওয়ারা রোড মসজিদ, গোল মসজিদ, খেজুর ওয়ালি মসজিদ, আনার ওয়ালি মসজিদ এবং গোল দুকান ওয়ালি মসজিদ। হিন্দু মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের ওপর জামা মসজিদ নির্মিত হয়েছে- এই দাবি সামনে আসার পরই ওই স্থানে জরিপ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। এরপরই গত নভেম্বর মাস থেকেই সম্ভলে উত্তেজনা বিরাজ করছে। জরিপের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়। এতে পাঁচজন নিহত এবং ২০ জনেরও বেশি পুলিশ সদস্য আহত হন।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে, সম্ভল পুলিশের সিনিয়র কর্মকর্তা অনুজ কুমার চৌধুরী মুসলিমদের হোলির সময় ঘরে থাকার ‘পরামর্শ’ দেওয়ার পর বিতর্ক শুরু হয়। তার বক্তব্য ছিল বছরে ৫২টি জুমাবার আসে কিন্তু হোলি বছরে একবারই আসে। যদি তারা (মুসলিমরা) তাদের গায়ে হোলির রং পড়া দেখতে না চায়, তাহলে তাদের ঘরে থাকা উচিত।’ সম্ভল পুলিশের ওই মন্তব্যকে সমর্থন করেছিলেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
এ বছর শুক্রবারের নামাজের সঙ্গে হোলি উৎসবের দিন মিলে যাওয়ায় বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতার দেওয়া মন্তব্য ঘিরে বিতর্কের জন্ম হয়েছে। মঙ্গলবার, বিজেপি নেতা রঘুরাজ সিং পরামর্শ দিয়েছেন, হোলি উদ্যাপনের সময় অসুবিধা এড়াতে মুসলিম পুরুষদের ত্রিপল দিয়ে তৈরি হিজাব পরতে হবে।’