ইরান ও ইসরায়েলের সাম্প্রতিক সংঘাতের প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা সন্দেহে ব্যাপক গ্রেপ্তার অভিযান চালাচ্ছে তেহরান। এর পাশাপাশি একাধিক অভিযুক্ত ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ডও কার্যকর করা হচ্ছে। ইরান সরকারের অভিযোগ, ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) শীর্ষ কমান্ডার ও পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের টার্গেট করে হত্যাসহ যুদ্ধ চলাকালীন একাধিক গুরুত্বপূর্ণ হত্যাকাণ্ডে ইসরায়েলের কাছে সরবরাহ করা তথ্যই ভূমিকা রেখেছে। এসব হত্যাকাণ্ডের জন্য ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদকে দায়ী করেছে তেহরান। তারা ইরানের ভিতর থেকেই এসব পরিচালনা করেছে বলে দাবি দেশটির। খবরে বলা হয়েছে, এই হত্যাকাণ্ডগুলোর ব্যাপকতা ও নিখুঁত বাস্তবায়নে হতবাক ইরানি কর্তৃপক্ষ। এ কারণে জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে এখন যে কোনো বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছে ইরান।
এদিকে ইসরায়েলের সঙ্গে ১২ দিনব্যাপী সংঘাতের সময় তাদের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে তিনজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে ইরান সরকার। যুদ্ধবিরতির পরদিন গত ২৫ জুন এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। এরপর থেকে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ রয়েছে-এমন শ শ সন্দেহভাজনের গ্রেপ্তারের ঘোষণা দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। এমনকি আটক কয়েকজনের বক্তব্যও রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়েছে। সেখানে তাদের ইসরায়েলি গোয়েন্দাদের সঙ্গে কাজ করার কথা স্বীকার করতে দেখা যায়।
ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে বিলম্বিত করতেই মার্কিন হামলা হয়েছে : পেন্টাগনের প্রাথমিক গোপন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে ইরানের তিনটি পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে মাত্র কয়েক মাসের জন্য বিলম্বিত করতে, ধ্বংস করতে নয়। দুজন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বরাতে মার্কিন সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান বলেছে, এই প্রাথমিক মূল্যায়নটি প্রস্তুত করেছে ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি (ডিআইএ)। এতে বলা হয়েছে, ইরানের মূল পরমাণু কর্মসূচির যন্ত্রপাতি বিশেষ করে সেন্ট্রিফিউজগুলো সংস্কার ও ফের চালুর উপযোগী এবং কয়েক মাসের মধ্যেই তা আবার চালু হতে পারে। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ইরানের ৪০০ কেজির বেশি ৬০ শতাংশ মাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুত হামলার আগে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং তা গোপন স্থাপনায় স্থানান্তর করা হয়ে থাকতে পারে। যদিও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প টেলিভিশন ভাষণে দাবি করেন, ইরানের নাতানজ, ফর্ডো এবং ইসফাহানের পরমাণু স্থাপনাগুলো ‘সম্পূর্ণ ধ্বংস’ হয়েছে। -বিবিসি