গাজায় চলমান সংঘাতের মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়াসুস ইসরায়েলকে ‘দয়া’ দেখানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর মতে নিজেদের স্বার্থেই ইসরায়েলের শান্তি প্রতিষ্ঠা করা জরুরি। বৃহস্পতিবার ডব্লিউএইচওর বার্ষিক অধিবেশনে তিনি এ আহ্বান জানান।
ডব্লিউএইচওপ্রধান তাঁর বক্তৃতায় বলেন, এ যুদ্ধ ইসরায়েলকেই ক্ষতিগ্রস্ত করছে এবং এর কোনো স্থায়ী সমাধান আসবে না। ইথিওপিয়ায় যুদ্ধের মধ্যে বড় হওয়ার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে তেদরোস বলেন, ‘এ মুহূর্তে গাজার মানুষ কী অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন, তা আমি অনুভব করতে পারি। আমি সেটি টের পাই। আমি কল্পনা করতে পারি। এমনকি আমি সে শব্দও শুনতে পাই। আর এর কারণ হচ্ছে, আমার পিটিএসডি (পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডার)।’ তিনি খাদ্যকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা এবং চিকিৎসা সরঞ্জামকে অস্ত্র বানানোকে ‘অন্যায়’ ও ‘নিকৃষ্ট’ বলে অভিহিত করেন। তেদরোস বলেন, ‘শুধু একটি রাজনৈতিক সমাধানই প্রকৃত শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারে। ইসরায়েলের নিজেদের স্বার্থেই শান্তি প্রতিষ্ঠা করা জরুরি। আমি মনে করি, এ যুদ্ধ ইসরায়েলকেই ক্ষতিগ্রস্ত করছে এবং এটি কোনো স্থায়ী সমাধান আনবে না। আমি আপনাদের কাছে দয়া দেখানোর অনুরোধ জানাচ্ছি। এটি আপনাদের জন্যও ভালো, ফিলিস্তিনিদের জন্যও ভালো, মানবতার জন্যও ভালো।’ ডব্লিউএইচওর জরুরি বিভাগের পরিচালক মাইকেল রায়ান জানান, গাজায় ২১ লাখ মানুষ তাৎক্ষণিক মৃত্যুঝুঁকিতে আছেন। তিনি অনাহার বন্ধ, জিম্মিদের মুক্তি, স্বাস্থ্যব্যবস্থা পুনর্বহাল এবং ত্রাণ সরবরাহ নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন। সংঘাতপূর্ণ এলাকার কাছাকাছি এবং হামলার শিকার হওয়ায় গত সপ্তাহে গাজার চারটি প্রধান হাসপাতাল চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে।-এএফপি
জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, গাজা উপত্যকার ৩৬টি হাসপাতালের মধ্যে বর্তমানে ১৯টি চালু আছে, যেখানে কর্মীরা ‘অসম্ভব কঠিন পরিবেশে’ কাজ করছেন। এখানকার প্রায় ৯৪ শতাংশ হাসপাতাল ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে, যার ফলে উত্তর গাজার বাসিন্দারা প্রায় সব ধরনের স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। -এএফপি