ভারতের রাজধানী দিল্লি বায়ুদূষণের তালিকায় বরাবরই সামনের সারিতে থাকে। গত কয়েক মাস অপ্রত্যাশিতভাবে তা আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। দীপাবলি উৎসবের পর বায়ুর মান নেমেছে বিপজ্জনক সীমায়। শহরজুড়ে ঘন বাদামী কুয়াশা ছড়িয়ে পড়েছে। এ পরিস্থিতিতে সরকার প্রথমবারের মতো কৃত্রিম বৃষ্টিপাতের উদ্যোগ নিয়েছে।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা জানিয়েছেন, ভারতের রাজধানীর জন্য কৃত্রিমভাবে বৃষ্টি ঝরানো ‘অপরিহার্য’ হয়ে উঠেছে। শুক্রবার এ বক্তব্যের আগেই তিনি জানিয়েছিলেন, ক্লাউড সিডিংয়ের মাধ্যমে কৃত্রিম বৃষ্টিপাত ঘটানোর জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তার দাবি, পরিবেশগত সংকট মোকাবিলায় এটি ‘অগ্রণী’ পদক্ষেপ।
তিনি আরও বলেছেন, সার্বিক পরিস্থিতি অনুকূল থাকলে, ২৯ অক্টোবর দিল্লিতে প্রথম কৃত্রিম বৃষ্টিপাত হবে। তিনি আবহাওয়া অফিসের বরাতে আরও জানান, ২৮, ২৯ ও ৩০ অক্টোবর দিল্লির আকাশে মেঘ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
এর আগে দিল্লির পরিবেশমন্ত্রী মনজিন্দর সিং সিরসাও এ বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, সরকার কৃত্রিম বৃষ্টিপাতের মেঘের বীজ বপনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।ইতোমধ্যে রাজধানীর বুরারি এলাকায় ক্লাউড সিডিং-এর সফল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। এই উদ্যোগের মধ্য দিয়ে দিল্লিতে বায়ূদূষণ মোকাবিলায় বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
দিল্লি গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহর হিসেবে শীর্ষে রয়েছে। ২০২৪ সালে শহরটির দূষণের মাত্রা আরও ৬ শতাংশ বেড়েছে। যার পেছনে ভূমিকা রেখেছে ফসল পোড়ানো, কারখানা ও যানবাহনের ধোঁয়া। শীতকালে বাতাস ঠান্ডা হয়ে গেলে এই দূষণ শহরের উপর আটকে থাকে, ফলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে।
মেঘের মধ্যে থাকা জলীয় বাষ্পকে ভারী করে কৃত্রিম বৃষ্টি ঘটানো হয়। একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ভার হলেই মেঘ থেকে বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ে জলীয় বাষ্প। এই জলীয় বাষ্পকে ভারী করা হয় ক্লাউড সিডিং পদ্ধতিতে। একটি হাইগ্রোস্কোপিক ক্লাউড সিডিং ও অন্যটি হিমবাহজনিত ক্লাউড সিডিং পদ্ধতি। দিল্লিতে এ কাজে ব্যয় হচ্ছে ৩ কোটি ২১ লাখ টাকা। দেশটির আইআইটি কানপুর থেকে একটি ক্লাউড সিডিং ফ্লাইট আসবে দিল্লিতে। সেটিই লবণকণা ছড়িয়ে বৃষ্টি ঘটাবে।
সূত্র: গার্ডিয়ান, হিন্দুস্থান টাইমস
বিডিপ্রতিদিন/এমই