৭৭ বছর বয়সী এক শিখ বৃদ্ধাকে ভারতে ফেরত পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দীর্ঘ তিন দশকেরও বেশি সময় তিনি আমেরিকায় বসবাস করেছে। হারজিৎ কৌর নামের এই নারী রাজনৈতিক অস্থিরতা থেকে বাঁচতে ১৯৯১ সালে তাঁর দুই ছেলেকে নিয়ে ভারতে পাঞ্জাব থেকে আমেরিকায় চলে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি বহুবার আশ্রয়ের আবেদন করেও ব্যর্থ হয়েছেন।
গত ৮ সেপ্টেম্বর আমেরিকার ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট বা আইসিই কর্মকর্তারা হারজিৎ কৌরকে সান ফ্রান্সিসকোতে নিয়মিত চেকিংয়ের সময় হঠাৎ গ্রেফতার করেন। এই ঘটনায় সেখানের শিখ সম্প্রদায়ের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।
হারজিৎ কৌর ক্যালিফোর্নিয়ার সান ফ্রান্সিসকো বে এরিয়ার হারকিউলিসে থাকতেন।প্রায় দুই দশক ধরে শাড়ির দোকানে সেলাইয়ের কাজ করে কর পরিশোধ করেছেন। তার বিরুদ্ধে কোনো অপরাধমূলক রেকর্ডও ছিল না। আইসিই কর্মকর্তারা তার সাথে অগ্রহণযোগ্য ও অমানবিক ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন তাঁর আইনজীবী দীপক আহলুওয়ালিয়া।
আইনজীবী আহলুওয়ালিয়া তাঁর সোশ্যাল মিডিয়াতে অভিযোগ করেছেন, হারজিৎ কৌরকে প্রায় ৬০-৭০ ঘণ্টা ধরে বিছানা বা চেয়ার ছাড়াই আটক কেন্দ্রে মেঝেতে শুয়ে থাকতে বাধ্য করা হয়। তার দুই টি হাঁটুই প্রতিস্থাপন করার এ অবস্থা তার জন্য ছিলো কষ্টকর। এমনকি তাকে ওষুধ খাওয়ার জন্য পানি বা উপযুক্ত খাবার দেওয়া হয়নি। সরবরাহ করা স্যান্ডউইচ খেতে না পারায় গার্ডরা উল্টো তাঁকেই দোষারোপ করেন বলে অভিযোগ।
আইসিই-এর কাছ থেকে এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানার চেষ্টা করা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে, ১৯ সেপ্টেম্বর তাঁকে জর্জিয়ার একটি আটক কেন্দ্রে স্থানান্তরিত করা হয় এবং ২২ সেপ্টেম্বর তাঁকে ভারতে ফেরত পাঠানো হয়। আইনজীবী জানান, তাকে শেষবারের মতো নিজের বাড়িতে যাওয়া বা পরিবার-বন্ধুদের কাছ থেকে বিদায় নেওয়ারও সুযোগ দেওয়া হয়নি।
দিল্লিতে অবতরণ করার পর টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে হারজিৎ কৌর বলেন, এতদিন (আমেরিকাতে) থাকার পর হঠাৎ এভাবে আটক করে নির্বাসন করা হলো; এর চেয়ে তো মরে যাওয়াই ভালো।
সূত্র: বিবিসি
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল