রাজ্য ঘোষণার দাবিতে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে ভারতের বৃহত্তম কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাদাখে। রাজধানী লেহতে বুধবার এ বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষুব্ধ লোকজন লেহতে অবস্থিত বিজেপির কার্যালয় এবং নগর প্রশাসন ভবনে অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষে ৪ জন নিহত এবং কমপক্ষে ৯০ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনার পর ওই দিন রাত থেকেই পুলিশি অভযান চালিয়ে কংগ্রেস নেতাসহ অর্ধশতাধিক বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সূত্র : এনডিটিভি।
বিক্ষোভ উসকে দেওয়ার জন্য জলবায়ুকর্মী সোনাম ওয়াংচুক এবং তার উসকানিমূলক বক্তব্যকে দায়ী করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। এ ছাড়া উসকানি দেওয়ার অভিযোগে লেহ নগর প্রশাসনের কাউন্সিলর এবং কংগ্রেস নেতা ফুন্তসোগ স্তানজিন সেপাগের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ, বিক্ষোভ সংগঠিত করা এবং বিজেপি কার্যালয় ও নগর প্রশাসন ভবনে আগুন দেওয়ায় নেতৃত্ব দিয়েছেন সেপাগ। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে যাদের গ্রেপ্তার করেছে তাদের মধ্যে কংগ্রেস নেতা সেপাগ থাকতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত লাদাখকে রাজ্য হিসেবে স্বীকৃতির দাবিতে বরাবরই সোচ্চার আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন জলবায়ু আন্দোলনকর্মী এবং ভারতের কেন্দ্রশাসিত এই অঞ্চলটির বাসিন্দা সোনাম ওয়াংচুক। এই দাবিতে ১৫ দিন আগে অনশন শুরু করেন তিনি। এই ১৫ দিন ধরেই তার ভক্ত-অনুসারীরা সব সময় তাকে ঘিরে ছিলেন। অভিযোগ উঠেছে, বুধবার দুপুরের দিকে ভক্ত-অনুসারীদের উদ্দেশে নেপালের সাম্প্রতিক জেন-বিক্ষোভের সাফল্যকে তুলে ধরে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছিলেন তিনি। তার বক্তব্য শেষ হওয়ার পর সমাবেশ থেকে বেশ কয়েকজন উঠে সড়কে বিক্ষোভ শুরু করেন। অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে এ সময়েই।
গতকাল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহারের জন্য গত ১৫ দিনে সোনাম ওয়াংচুককে অনেক নেতা অনুরোধ করেছেন, কিন্তু সেসব অনুরোধ উপেক্ষা করেছেন তিনি। তথাকথিত আরব বসন্ত এবং নেপালের সাম্প্রতিক জেন-জি আন্দোলনের উদাহারণ দিয়ে উসকানিমূলক বক্তব্যের মাধ্যমে নিজের অনুসারীদের ক্ষেপিয়ে তুলেছেন তিনি। সোনাম ওয়াংচুকের উসকানিমূলক বক্তব্যের পরেই লেহতে মব সহিংসতা শুরু হয়েছে, তার প্রমাণ পাওয়া গেছে।’ জানা গেছে, তিন বছর ধরে রাজ্য হিসেবে স্বীকৃতির দাবিতে আন্দোলন চলছে লাদাখে। জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটির বাসিন্দাদের মতে, লাদাখের ভূমি, সংস্কৃতি ও সম্পদ রক্ষার জন্য এই স্বীকৃতি জরুরি।