আকাশসীমায় রাশিয়ার একাধিক ড্রোন প্রবেশ করার পর বেশ কয়েকটি ভূপাতিত করার দাবি করেছে পোল্যান্ডের সেনাবাহিনী। আল-জাজিরার তথ্যমতে, একাধিকবার পোলিশ আকাশ সীমায় প্রবেশ করছিল রাশিয়ার ড্রোন। ২০২২ সালে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর পোল্যান্ড সরাসরি রুশ সামরিক সম্পদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয় এই প্রথমবার।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবরে জানানো হয়, বুধবার ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলে রাশিয়ার ব্যাপক হামলার সময় পোল্যান্ডের আকাশসীমায় প্রবেশ করা ড্রোন ভূপাতিত করেছে পোল্যান্ড। ন্যাটো সদস্য এই দেশ ঘটনাটিকে ‘আগ্রাসনের ফল’ বলে উল্লেখ করেছে। এটি চলমান যুদ্ধে প্রথমবারের মতো ন্যাটোর কোনো সদস্য দেশ রাশিয়ান ড্রোনে গুলি চালাল। পোল্যান্ড ও ন্যাটোর যুদ্ধবিমান এবং প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও এখন সক্রিয় করা হয়েছে।
পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক জানান, বিপুল সংখ্যক রাশিয়ান ড্রোন পোল্যান্ডের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে এবং যেগুলো সরাসরি হুমকি সৃষ্টি করেছে, ভূপাতিত করা হয়েছে সেগুলো।
ন্যাটোর মুখপাত্র বলেছেন, ‘ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুটে পোলিশ নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন এবং জোটটি পোল্যান্ডের সঙ্গে পরামর্শ করছে।’
পোল্যান্ডের সামরিক কমান্ড জানিয়েছে, রাশিয়ার সীমান্তবর্তী হামলার সময় বারবার তাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে ড্রোন। তবে এসব অনুপ্রবেশ ঠেকাতে গৃহীত অভিযান এখন শেষ হয়েছে। রাডার ১০টিরও বেশি বস্তু শনাক্ত করেছে, যেগুলো হুমকি তৈরি করেছিল সেগুলো ‘নিষ্ক্রিয়’ করা হয়েছে।
এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এই বস্তুগুলো যেখানে ভূপাতিত হয়েছে সেই সম্ভাব্য স্থানগুলো চিহ্নিত করার জন্য অনুসন্ধান চলছে।’ এ ঘটনায় পোল্যান্ডের জনগণকে ঘরে থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে এবং পোডলাস্কি, মাজোভিয়েস্কি ও লুবলিন অঞ্চলের নাম উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ‘এটি আগ্রাসনের একটি ঘটনা, যা আমাদের নাগরিকদের নিরাপত্তার হুমকি তৈরি করেছে।’
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে রয়টার্সের মন্তব্যের অনুরোধে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এ বিষয়ে অবহিত হয়েছেন বলে সিএনএন প্রতিবেদক কাইটলান কলিন্স মঙ্গলবার জানিয়েছেন। তবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। এখনও এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি ন্যাটোও।
রাশিয়ান ড্রোন ২০২২ সালে যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই কয়েকবার ইউক্রেন সীমান্তবর্তী দেশগুলোর আকাশসীমায় ঢুকেছে, যার মধ্যে পোল্যান্ড ও রোমানিয়াও রয়েছে। তবে এতদিন সেগুলো ভূপাতিত করা থেকে বিরত থেকেছে এসব দেশ। কর্মকর্তারা এর আগে বলেছিলেন, এ ধরনের পদক্ষেপে ঝুঁকি তৈরি হতে পারে এবং উত্তেজনা আরো বাড়াতে পারে রাশিয়া ও ন্যাটোর মধ্যে।
সূত্র: রয়টার্স, আল-জাজিরা।
বিডি প্রতিদিন/এএম