ভারতে বসবাসরত অবৈধ বাংলাদেশিদের দ্রুত শনাক্ত ও বহিষ্কারের লক্ষ্যে নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে আসামের বিজেপি সরকার। রাজ্যের মন্ত্রিসভা সম্প্রতি বিদেশিদের বহিষ্কারের জন্য একটি নতুন স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) অনুমোদন করেছে, যেখানে মাত্র ১০ দিনের মধ্যেই বিচারপ্রক্রিয়া শেষ করে বহিষ্কার কার্যকর করার বিধান রাখা হয়েছে।
১৯৫০ সালের ইমিগ্রেশন আইন অনুসারে এতদিন বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত কোনো ব্যক্তিকে বহিষ্কারের চূড়ান্ত ক্ষমতা ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের হাতে ছিল। তবে নতুন ব্যবস্থায় সন্দেহভাজন অভিবাসীকে এখন সরাসরি জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (এডিসি) সামনে হাজির হয়ে নাগরিকত্ব সংক্রান্ত নথি প্রমাণ করতে হবে। কর্মকর্তারা নথি যাচাই করে ১০ দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানাবেন।
যদি তারা নথিতে সন্তুষ্ট না হন, তাহলে ১১তম দিনেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে হোল্ডিং সেন্টারে পাঠানো হবে। সেখান থেকে প্রক্রিয়া শেষে বিএসএফের সহায়তায় সীমান্ত পেরিয়ে তাকে নির্বাসিত করা হবে।
আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে জানান, ডিসির সিদ্ধান্তের পর সরকার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ডিটেনশন ক্যাম্পে নিয়ে যাবে এবং বিএসএফকে সঙ্গে নিয়েই তাকে বাংলাদেশ বা পাকিস্তানে ফেরত পাঠানো হবে।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ সালের পর নাগরিকত্ব সংক্রান্ত যেসব বিষয়ে ডিসি বা এডিসি নিশ্চিত হতে পারবেন না, সেসব মামলা ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হবে। ট্রাইব্যুনাল যদি প্রমাণ পায় যে অভিযুক্ত ব্যক্তি বিদেশি, তবে সঙ্গে সঙ্গেই নির্বাসন কার্যকর হবে।
নতুন এসওপি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আসামে প্রবেশের ১২ ঘণ্টার মধ্যে বিদেশিকে সরাসরি ফেরত পাঠানোর ক্ষমতাও জেলা প্রশাসকের হাতে থাকবে। এখানে এনআরসির কোনো প্রভাব নেই। এনআরসিতে নাম থাকলেও কেউ বিদেশি হিসেবে প্রমাণিত হলে তাকে নির্বাসিত করা হবে। সুপ্রিম কোর্টও এ বিষয়ে স্পষ্ট রায় দিয়েছে।
আসাম সরকারের হিসাবে, ইতোমধ্যে রাজ্য থেকে ৩০ হাজার ১২৮ জনকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। নতুন এই প্রক্রিয়া কার্যকর হলে বহিষ্কারের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। আগামী ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যেই নতুন এসওপি কার্যকর হতে পারে বলে সূত্র জানিয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই