রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার দরবার শরিফে হামলার সময় নিহত ভক্ত রাসেল মোল্লার (২৮) বাবা আজাদ মোল্লা বাদী হয়ে গোয়ালন্দ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় ৪ হাজার জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। কবর থেকে লাশ উত্তোলনের সরাসরি নির্দেশদাতা ইমামসহ এর মধ্যে ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সকালে রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ আল রাজিব বলেন, সোমবার রাতে গোয়ালন্দ থানায় নিহত রাসেল হত্যার ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। মামলায় স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম মাওলানা আবদুল লতিফসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশের দাবি নুরাল পাগলার লাশ কবর থেকে উত্তোলনের সরাসরি নির্দেশদাতা ছিলেন তিনি। তবে মাওলনা আবদুল লতিফের গ্রেপ্তারকে ষড়যন্ত্রমূলক দাবি করেছেন স্থানীয় আরেক মসজিদের ইমাম মাওলানা হাসিবুল হাসান শিমুল। তিনি বলেন, লতিফের পরিবারের লোকজন আমার কাছে আসছিলেন। তিনি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। তার কোনো ছবি প্রশাসন আমাদের দেখাতে পারেনি। ভিডিওর শব্দ থেকে তাকে শনাক্ত করেছেন বলে পুলিশ আমাদের জানিয়েছেন। আমাদের কাছে মনে হয়েছে ভিডিওর ওই শব্দ এআই প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি করা। দ্রুত সময়ের মধ্যে স্থানীয় আলেমের মুক্তি দাবি করেন তিনি।
২৩ আগস্ট বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলা। ওইদিন রাতে দরবারের ভিতরে বেদির ওপর ১২ ফুট উঁচু করে দাফন করা হয়। বিষয়টি শরিয়ত পরিপন্থি বলে অভিযোগ তোলেন ইমান আকিদা রক্ষা কমিটি। গত শুক্রবার বিকালে গোয়ালন্দ আনসার ক্লাবে পূর্ব ঘোষিত বিক্ষোভ থেকে দরবারে হামলা ও ভাঙচুর করে কবর থেকে লাশ তুলে পুড়িয়ে ফেলা হয়। এর আগে নুরুল পাগলার দরবারে হামলা-ভাঙচুরের সময় নুরালের ভক্ত জেনে রাসেলের ওপর হামলা করা হয়। তিনি বৃহস্পতিবার দরবারে এসেছিলেন। আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার ওপর দ্বিতীয় দফা হামলা হয়। সেখান থেকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি হলে শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাসেলের মৃত্যু হয়। নিহত রাসেল মোল্লা গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের তেনাপচা গ্রামের আজাদ মোল্লার ছেলে।