রাশিয়ার দূরপ্রাচ্যের কামচাটকা উপদ্বীপে ৮.৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলজুড়ে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল ১৯ কিলোমিটার গভীরে এবং কামচাটকার উপকূলীয় শহর পেত্রোপাভলোভস্ক-কামচাটস্কি থেকে প্রায় ১২৫ কিলোমিটার দূরে।
এই ভূমিকম্পের ফলে কামচাটকা অঞ্চলের কিছু এলাকায় ৩ থেকে ৪ মিটার (১০ থেকে ১৩ ফুট) উচ্চতার সুনামি ঢেউ আঘাত হানে। এতে কিছু ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে স্থানীয় কর্মকর্তারা জানান।
রাশিয়ার সিভেরো-কুরিলস্ক শহর থেকে লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। শাখালিন অঞ্চলের গভর্নর জানিয়েছেন, এলাকাবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
রাশিয়ার জরুরি ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় সতর্ক করে বলেছে, সবাইকে পানি সংলগ্ন এলাকা থেকে সরে যেতে হবে। এছাড়া, একটি কিন্ডারগার্টেন ভবনের ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। যদিও এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের তথ্য নিশ্চিত করা হয়নি। কামচাটকার গভর্নর এই ভূমিকম্পকে ‘সাম্প্রতিক দশকের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী’ বলে মন্তব্য করেছেন।
এই ভূমিকম্পের কিছুক্ষণ পরই ৬.৯ মাত্রার আরেকটি আফটারশক (পরবর্তী কম্পন) পেত্রোপাভলোভস্ক-কামচাটস্কি থেকে দক্ষিণ-পূর্বে আঘাত হানে। এটি ছিল মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে।যুক্তরাষ্ট্রের সুনামি সতর্কতা কেন্দ্র জানিয়েছে, হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের উত্তর-পশ্চিম অংশ, রাশিয়ার উপকূল এবং জাপানের বিস্তৃত এলাকায় বিপজ্জনক সুনামি ঢেউ আঘাত হানতে পারে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থা সতর্ক করে বলেছে, দেশটির উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে ১ মিটার (৩.২ ফুট) পর্যন্ত উচ্চতার সুনামি ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন এবং জরুরি কমিটি গঠন করা হয়েছে।এছাড়া দক্ষিণ কোরিয়া, উত্তর কোরিয়া, তাইওয়ান, পলাউ, মার্শাল দ্বীপপুঞ্জসহ কয়েকটি অঞ্চলেও ছোট আকারের ঢেউ আঘাত হানার আশঙ্কা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, এর আগেও জুলাই মাসের শুরুতে কামচাটকা উপকূলে ৭.৪ মাত্রার একাধিক ভূমিকম্প হয়েছিল। সেগুলোর একটি ছিল ভূমি থেকে ২০ কিলোমিটার গভীরে এবং শহর থেকে ১৪৪ কিলোমিটার দূরে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে জানিয়েছেন, ভূমিকম্পের পর আরও আফটারশক এবং সুনামি ঢেউ হতে পারে, তাই উপকূলবর্তী এলাকার সবাইকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল