নিউইয়র্ক সিটির ব্যস্ততম সড়ক পার্ক এভিনিউয়ের একটি বহুতল অফিস ভবনে বন্দুকধারীর হামলায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নিউইয়র্ক পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ইসলাম (৩৬)। সোমবার সকালের এ হামলায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়।
নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্ট (এনওয়াইপিডি) জানিয়েছে, হামলাকারী শনাক্ত করা হয়েছে শেন তামুরা (২৭) নামে এক যুবক হিসেবে, যার মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে অতীতে পুলিশ রেকর্ড ছিল।
পার্ক এভিনিউয়ের ৩৪৫ নম্বর ভবনে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন দিদারুল ইসলাম। ভবনে ঢোকার সময় প্রথমেই তাকেই গুলি করেন হামলাকারী তামুরা। এরপর তামুরা ভবনের ৩৩ তলায় উঠে আরও তিনজনকে হত্যা করে—দুই পুরুষ ও একজন নারী। এখনো নিহতদের পরিচয় প্রকাশ করেনি কর্তৃপক্ষ।
একজন আহত ব্যক্তি আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হামলার পর নিজেই নিজের মাথায় গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেন তামুরা।
নিউইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামস দিদারুল ইসলামের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, “তিনি তার সেরা কাজটাই করছিলেন—মানুষকে রক্ষা করা। তিনি একজন নায়কের মতো জীবন দিয়েছেন।”
পুলিশ কমিশনার জেসিকা টিশ জানান, দিদারুল ছিলেন ব্রঙ্কসের ৪৭তম প্রিসিনক্টের অফিসার এবং তিন বছরের বেশি সময় ধরে কর্তব্য পালন করেছেন। “তিনি নিজের জীবন দিয়ে অন্যদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন” বলেন টিশ।
দিদারুল ইসলাম ছিলেন ব্রঙ্কসের বাংলাদেশি কমিউনিটির একজন সম্মানিত সদস্য। তার মৃত্যুতে সোমবার সন্ধ্যায় তার বাসভবনে ভিড় করেন কমিউনিটির অনেকে। বন্ধু মারজানুল করিম বলেন, “অনেকে বলেছিলেন পুলিশে যোগ দেওয়া নিরাপদ নয়। কিন্তু দিদার ভাই চেয়েছিলেন এমন কিছু করে যেতে যাতে তার পরিবার গর্ব করতে পারে। তিনি একটি উত্তরাধিকার রেখে যেতে চেয়েছিলেন।”
নিহত দিদারুল ইসলাম দুই সন্তানের বাবা ছিলেন এবং তার স্ত্রী বর্তমানে গর্ভবতী। মেয়র অ্যাডামস বলেন, “তিনি ছিলেন তার বাবার একমাত্র ছেলে। আমি আমার সন্তানের কথা ভাবি এবং ভাবতেই পারি না, এমন একটি শোক কিভাবে সামাল দেওয়া যায়।”
নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্ট তাদের অফিশিয়াল এক্স (টুইটার) অ্যাকাউন্টে দিদারুলকে ‘বিভাগের গর্ব’ বলে উল্লেখ করেছে। পোস্টে লেখা হয়েছে, “তিনি নিউইয়র্কবাসীকে রক্ষার চেষ্টা করছিলেন, তখনই নির্মমভাবে তার জীবন কেড়ে নেওয়া হয়েছে।”
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল