জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন এ তিনটি প্রক্রিয়া সমান্তরালভাবে এগিয়ে নিতে হবে। এর ব্যত্যয়ে আবারও জাতীয় বিপর্যয় ঘটতে পারে।’
গতকাল ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার মিশন আয়োজিত ‘জুলাই স্মরণসভায়’ তিনি এ কথা বলেন। সভায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন উপস্থিত ছিলেন। জামায়াত আমির বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে আওয়ামী লীগ সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের আগে কোনো নির্বাচন হতে পারে না। শহীদ পরিবারের সদস্যরা কোনো বিচার না দেখে নির্বাচনে আগ্রহী নন। তাদের বক্তব্য-যারা জঘন্য অপরাধ করেছে, তাদের মধ্যে অন্তত কয়েকজনের বিচার চোখে দেখতে চাই।’ ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিংয়ের কিছু অপূর্ণতা ছিল, তা পূরণ করে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের ওপর অবিচার হয়েছে, আমাদের নেতাদের বিচারিক হত্যাকা ঘটেছে, এমন বিচার আর দেখতে চাই না। বিচার যেন শতভাগ স্বচ্ছ ও ন্যায়ের ভিত্তিতে হয়।
যারা খুন করেছে, তারা যেন ন্যায্য শাস্তি পায় এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতি দূর হয়, এ প্রক্রিয়ায় জামায়াতের পক্ষ থেকে পূর্ণ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সরকার গঠনে সুযোগ পেলে কিংবা বিরোধী দলে থাকলেও জামায়াতের ভূমিকা হবে স্পষ্ট, ন্যায়নিষ্ঠ ও অকুতোভয়। শুধু আল্লাহকে ছাড়া আমরা কাউকে ভয় করব না। দায়বদ্ধ থাকব নিজের বিবেক ও দেশবাসীর কাছে। অন্য দলগুলো থেকেও একই প্রতিশ্রুতি আশা করি। কে সরকার গঠন করবে, তা নিয়ে প্রশ্ন নেই। তবে যারাই আসুক, তারা যেন জাতির এ আমানত রক্ষা করে।’
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে জামায়াত আমির বলেন, ‘চোখ হারানো মানুষের সংখ্যা ৫০০-এর কাছাকাছি, পঙ্গু বা প্যারালাইজড হয়েছেন আড়াই শর বেশি। ৫ হাজারের কম নয়, যারা জীবিত লাশ হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।’ জামায়াতের পক্ষ থেকে জুলাই শহীদদের প্রোফাইল করে ১২ খে সংরক্ষণ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলা, ইংরেজি ও আরবি ভাষায় তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। অন্ধ, পঙ্গু ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীনদের নিয়েও কাজ চলছে। এ কাজ সরকারিভাবে সম্পন্ন হলে সেটি হবে অধিকতর কার্যকর।’