গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের অব্যাহত হামলার প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক ক্ষোভের মাঝে ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরের রামাল্লা সফরে যাচ্ছেন সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান। এটি হবে ৫৮ বছর পর প্রথমবারের মতো কোনো শীর্ষ সৌদি কূটনীতিকের পশ্চিম তীর সফর। ফিলিস্তিন ইস্যুতে এটিকে সৌদি আরবের একটি গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
শুক্রবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে ফিলিস্তিন দূতাবাসের একটি সূত্র জানায়, সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধিদল রোববার রামাল্লা সফরে যাবে। সফরকালে তারা ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে বৈঠক করবেন। তবে সৌদি নেতৃত্বাধীন এই সফরে বাধা দেওয়ার হুমকি দিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির এক কর্মকর্তা মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে বলেন, তারা এই সফরকে ‘উসকানিমূলক’ হিসেবে বিবেচনা করছে এবং এতে কোনো ধরনের সহযোগিতা করবে না। ওই কর্মকর্তা আরও জানান, সফরের জন্য ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) পরিকল্পনায় তারা সহযোগী নয়।
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌদি আরব, মিশর, জর্ডান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার ও তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সমন্বয়ে গঠিত একটি আরব প্রতিনিধিদল রামাল্লায় ফিলিস্তিনি নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পরিকল্পনা করছে। তবে পশ্চিম তীরের প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ করে ইসরায়েল, ফলে এ সফরের জন্য তাদের অনুমোদন প্রয়োজন।
ফিলিস্তিনের উপ-রাষ্ট্রপতি হুসেইন আল-শেখ সিএনএনকে জানান, রবিবারের বৈঠকে সৌদি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন প্রিন্স ফয়সাল। তাদের সঙ্গে যোগ দেবেন অন্যান্য আরব দেশের শীর্ষ কূটনীতিকরাও।
সৌদি আরবে নিযুক্ত ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত মাজেন ঘোনেইম সৌদি রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আল এখবারিয়াকে জানান, এই সফরের মাধ্যমে আরব ও মুসলিম বিশ্বের পক্ষ থেকে একটি শক্তিশালী বার্তা দেওয়া হবে যে, ফিলিস্তিনি ইস্যু এখনো তাদের জন্য একটি কেন্দ্রীয় বিষয়।
ইসরায়েলি একটি সূত্র সিএনএনকে জানিয়েছে, তারা এই সফর সম্পর্কে অবহিত হলেও এতে অনুমোদন দেয়নি। থিঙ্ক ট্যাঙ্ক টি-পলিটোগ্রাফির প্রধান শাউল আরিলি বলেন, ১৯৬৭ সালে পশ্চিম তীর দখলের পর এটিই হবে প্রথম উচ্চ পর্যায়ের সৌদি প্রতিনিধিদলের সফর। গাজা যুদ্ধ শুরুর পর ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রতি সৌদি সমর্থনের প্রকাশ এটি।
তিনি বলেন, “এটি একটি নাটকীয় পরিবর্তন। সৌদি আরব পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে যে তারা ১৯৬৭ সালের সীমানা অনুযায়ী দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানকে সমর্থন করে।” সফরটি এমন এক সময়ে হতে যাচ্ছে যখন গাজায় চলমান ইসরায়েলি অভিযানের কারণে সৌদি-ইসরায়েল সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রচেষ্টা থমকে গেছে এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির দাবিতে আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সূত্র : সিএনএন, ডেইলি সাবাহ ও এএফপি।
বিডি-প্রতিদিন/শআ