পবিত্র ঈদুল আজহার বাকি আর মাত্র পাঁচ দিন। ইতোমধ্যে কোরবানির পশু বিক্রির জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে সরকার। দেশের বিভিন্ন স্থানে এসব পশুর বেচাকেনাও শুরু হয়েছে। এবার চাহিদার চেয়ে ২০ লাখের বেশি পশু উদ্বৃত্ত থাকবে। তবু রাজধানীতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০ লাখ পশুর ঘাটতি রয়েছে বলে জানিয়েছে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ঢাকার বাজারগুলো শুরু হলে পশুর সরবরাহ স্বাভাবিক হবে। মাঠপর্যায়ে আমাদের টিমওয়ার্ক হচ্ছে। যেসব বাজারে পশুর উপস্থিতি কম দেখা যাবে, নিশ্চয়ই সেখানে পশুর সরবরাহ বাড়ানো হবে। তা ছাড়া আমরা চাই, ভোক্তা ও উৎপাদনকারী উভয়ে যেন সন্তুষ্ট থাকে। এর জন্য ফড়িয়াদের দৌরাত্ম্য কমাতে ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট সব অধিদপ্তরের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি প্রাণী অধিকার রক্ষায় সচেতনতামূলক প্রচারণাসহ হাটগুলোতে আমাদের সার্ভিস নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।
এদিকে ঢাকার বাজারে পশুর ঘাটতিকে কেন্দ্র করে ফড়িয়া সিন্ডিকেট দ্বারা ভোক্তার পকেট লুটের আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রাণিসম্পদের গত কয়েক বছরের প্রকাশিত পরিসংখ্যানের সঙ্গে মাঠপর্যায়ের তথ্যের মিল রয়েছে। এতে ভোক্তাপর্যায়ে কোরবানির পশু নিয়ে কিছুটা স্বস্তি এসেছে। কিন্তু ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে দালাল সিন্ডিকেট কৃষককে ঠকিয়ে ভোক্তার পকেট লুটতে প্রস্তুত। এদের দমন করা না গেলে পশুঘাটতির সুযোগে ঢাকার ক্রেতাদের কাছে চড়া দামে পশু বিক্রি করবে ফড়িয়ারা। এর জন্য সরকারের আগাম প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি।
জানা যায়, আসছে কোরবানিতে দেশের আট বিভাগের জন্য পশুর চাহিদা রয়েছে প্রায় ১ কোটি। বিপরীতে ১ কোটি ২৪ লাখ ৪৭ হাজার ৩৩৭টি পশু প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এতে বিপুল সংখ্যক পশু উদ্বৃত্ত থাকছে। ফলে গত কয়েক বছরের চেয়ে এবারে পশুর দাম নাগালে থাকার পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমাদের কোরবানির পশুর চাহিদার চেয়ে যেহেতু উৎপাদন বেশি। তাই সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নিয়ে সব বিভাগের চাহিদা অনুসারে পশুর জোগান দেওয়া দরকার। যাতে ভোক্তা ও উৎপাদনকারী কেউ না ঠকেন। এ ছাড়া, ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে ভোক্তা অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসককে সঙ্গে করে বাজার তদারকি করা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উচিত হবে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যানুসারে, ঢাকা বিভাগে প্রায় ২৩ লাখের চাহিদা রয়েছে। বিপরিতে ১৩ লাখ পশু প্রস্তুত আছে। তাছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগে প্রস্তুত পশু রয়েছে ১৯ লাখ ৭৪ হাজার, রাজশাহীতে ৪৩ লাখ ৪৪ হাজার, খুলনায় ১৪ লাখ ৩৪ হাজার, বরিশালে ৪ লাখ ৫৯ হাজার, সিলেটে ৩ লাখ ৮ হাজার, রংপুরে ১৯ লাখ ৮০ হাজার ও ময়মনসিংহে পশু প্রস্তুত রয়েছে ৫ লাখ ৭৩ হাজার।