ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় পারিবারিক কলহের জের ধরে রুনা আক্তার (৩২) নামে এক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্বামী, শ্বশুর ও ফুফু শ্বাশুড়ি মিলে তাকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয় বলে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে। গত শনিবার রাতের কোনো এক সময় উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের ঘোলখার গ্রামের পশ্চিমপাড়ায় গৃহবধূর শ্বশুরবাড়িতে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
হত্যাকাণ্ডের শিকার রুনা আক্তার রাণীখার গ্রামের প্রয়াত শিক্ষক শেখ নাছির উদ্দিনের মেয়ে।
আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ছমিউদ্দিন জানান, ঘটনার পরই ভিকটিমের স্বামী সাইদুর রহমানকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার শ্বশুর আব্দুস সালামকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল থেকে আটক করেছে সদর মডেল থানার পুলিশ। রুনা আক্তারের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
নিহতের বড় ভাই শেখ জসিম উদ্দিন জানান, ‘তিন বছর আগে পাশের গ্রামের সাইদুর রহমানের সাথে পারিবারিকভাবে রুনার বিয়ে হয়। তাদের ১০ মাস বয়সী একটি সন্তান রয়েছে। ঢাকায় সেলুনে কাজ করেন সাইদুর। সম্প্রতি গ্রামের বাড়িতে জমি কেনার জন্য শ্বশুরবাড়ি থেকে প্রায় দুই লাখ টাকা নেন সাইদুর। এরপর আবার টাকা আনার জন্য রুনাকে চাপ দিলে তাদের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। এ বিষয় নিয়েই রুনার ওপর শারীরিক নির্যাতন চলছিল। শেষ পর্যন্ত তাকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়েছে।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক অনন্ত কুমার ভক্ত জানান, ‘হাসপাতালে আনার আগেই ভিকটিম মারা যায়। হাসপাতালে নিয়ে আসার পর ভিকটিমর বুকে ছুরিকাঘাতের গভীর চিহ্ন পাওয়া গেছে, যা প্রাণঘাতী ছিল।’
হাসপাতালের মর্গে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এস.আই) মোছা. শিরিন আক্তার। তিনি জানান, ভিকটিমের বাম বুকের উপরে গলার নিচে সাড়ে সাত ইঞ্চি গভীর ও ২ ইঞ্চি প্রস্থের ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এছাড়া তার অনামিকায় কাটা জখম রয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ছমিউদ্দিন জানান, ভিকটিমের স্বামী সাইদুরকে আটকের পর প্রথমে স্থানীয় ধরখার পুলিশ ফাঁড়িতে রাখা হয়েছিল। বর্তমানে তাকে আখাউড়া থানা হাজতে রাখা হয়েছে। রুনার শ্বশুর ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার হেফাজতে আছে। এ ঘটনায় এখনো কোন মামলা দায়ের করা হয়নি।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ