ধানের জেলা দিনাজপুরে উচ্চ ফলনশীল ও জিংক সমৃদ্ধ বোরো মৌসুমের নতুন জাতের ধান ব্রি-১০২ কৃষকদের সম্ভাবনার আশা জাগাচ্ছে। এই জাতের নতুন ধান খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি কৃষিতে বিপ্লব ঘটাবে। দিনাজপুর জেলায় এবার ২২০ হেক্টর জমিতে এই ধানের আবাদ হয়েছে জানিয়েছে কৃষি অফিস। নতুন সম্ভাবনার আশা কৃষকদের মাঝে।
দিনাজপুর মহিলা বহুমূখী শিক্ষা কেন্দ্র (এমবিএসকে)এর বাস্তবায়নে এবং পিকেএসএফ কৃষি ইউনিটের অর্থায়নে ও কারিগরি সহযোগিতায় সদর উপজেলায় ধানটির পরীক্ষামূলক চাষে মিলেছে ব্যাপক সাফল্য।
দেখা যায়, দিনাজপুর সদর উপজেলার কমলপুর ইউনিয়নের দানিহারী গ্রামের একটি প্রদর্শনী প্লটে (১ বিঘা জমিতে) এই জাতের ধান আবাদ করেছেন কৃষক মো. গোলাম মোস্তফা। এক শতাংশে ফলন হয়েছে এক মনেরও বেশি। চিকন ধানের জাতের মধ্যে এই ধানটি সর্বোচ্চ ফলন দিয়েছে। এছাড়াও নতুন এই জাতের ধানে প্রচলিত অন্যান্য জাতের ধানের মতো রোগ-বালাই নেই। লম্বা ও চিকন জাতের এই ধানের ভাত ঝরঝরে এবং খেতে সুস্বাদু। আর স্বল্প খরচে ধানের বাম্পার ফলন পেয়ে কৃষক লাভবান হবেন।
এমবিএসকে সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা হোসাইন মো. আবু সুফিয়ান এসব তথ্য জানিয়ে বলেন, পিকেএসএফ কৃষি ইউনিটের বীজ সহযোগিতায় ও এমবিএসকে এর বাস্তবায়নে সদর উপজেলায় এই প্রথম উচ্চ ফলনশীল ও জিংক সমৃদ্ধ বোরো মৌসুমের নতুন জাত ব্রি-১০২ আবাদ করেছেন একজন কৃষক। এই ধানের শীষগুলো খুবই পরিপুষ্ট ও ওজনেও বেশি। আবাদে খরচ কম ও রোগ বালাই তুলনামুলক অনেক কম। ব্রি ধান-২৯ বা চিকন জাতের বিকল্প হিসেবে এই ধানের আবাদ করা যায়। উৎপাদন অনেকাংশে বেশি হওয়ায় এই নতুন জাতের ধান আবাদে আশপাশের অনেক কৃষক অনুপ্রাণিত হয়েছেন। এবার ১ বিঘা জমিতে আবাদ হয়েছে, যা আগামীতে ১০ থেকে ১২ বিঘা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এই কৃষি কর্মকর্তা।
কমলপুর ইউপির দানিহারী গ্রামের কৃষক মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, আমি ১ বিঘা জমিতে নতুন জাত ব্রি-১০২ ধান আবাদ করেছি। লম্বা ও চিকন জাতের এই আমার প্রদর্শনী প্লটে সবচেয়ে বেশি ফলন দিয়েছে। চিকন ধানে এত বেশি ফলন দেখিনি আমার জীবনে। এই ধানে রোগ-বালাই নেই বললেই চলে। আগামী বছরে ৩ বিঘা জমিতে এই ধান আবাদ করবেন তিনি। এই ধান দেখে ভবিষ্যতে চাষাবাদের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন অনেক কৃষক। তারা আমরা কাছে এই ধানের বীজ চাইছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর দিনাজপুরের উপপরিচালক মো. আফজাল হোসেন বলেন, উচ্চ ফলনশীল ও জিংক সমৃদ্ধ নতুন জাতের ধান ব্রি-১০২ দিনাজপুর জেলায় এবার আবাদ ২২০ হেক্টর জমিতে। দিন দিন এই ধানের আবাদ বাড়ছে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য,বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ১৮ জানুয়ারি ২০২২ অনুষ্ঠিত জিংক সমৃদ্ধ বোরো মৌসুমের জন্য উচ্চ ফলনশীল জাত ব্রি ধান-১০২ হিসাবে দেশজুড়ে চাষাবাদের জন্য অবমুক্ত করে।
বিডি প্রতিদিন/এএম