অক্টোবর মাসটি বিশ্বব্যাপী ‘পিঙ্ক অক্টোবর’ নামে পরিচিত। ব্রেস্ট বা স্তন ক্যানসার সচেতনতা বৃদ্ধির একটি প্রতীকী মাস। এই সময়ে আমরা সবাই একত্রিত হই এই ভয়ংকর রোগ সম্পর্কে মানুষকে জানাতে, সচেতন করতে এবং সাহস দিতে। ‘প্রত্যেকটি গল্পই আলাদা, প্রত্যেকটি স্তন ক্যানসারের যাত্রা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, স্তন ক্যানসারের প্রতিটি নির্ণয়ই বিশেষভাবে ব্যক্তিগত’-এটিই এই বছর ২০২৫-এর ব্রেস্ট ক্যানসার সচেতনতা মাসের প্রতিপাদ্য বিষয়। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পালিত হয় এ মাসটি।
ব্রেস্ট ক্যানসার কী
ব্রেস্ট ক্যানসার হলো স্তনের কোষে অস্বাভাবিক বৃদ্ধিজনিত এক ধরনের ক্যাসার, যা সময়মতো ধরা না পড়লে শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। পুরুষদের হলেও এটি মহিলাদের মধ্যেই বেশি দেখা যায়।
কেন আগে জানা জরুরি
ক্যানসার যত দ্রুত ধরা পড়ে, চিকিৎসার সাফল্যের হার ততই বেশি। প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে সম্পূর্ণ নিরাময়ের সম্ভাবনা অনেক বেশি। দেরিতে ধরা পড়লে চিকিৎসা ব্যয়বহুল ও জটিল হয়ে ওঠে।
কীভাবে বুঝবেন
নিচের লক্ষণগুলো দেখা দিলে অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন :
* স্তনে চাকা বা গিঁট অনুভব করা
* স্তনের আকার বা চামড়ায় পরিবর্তন
* নিপল থেকে রক্ত বা অন্য রস নিঃসরণ
* স্তনের বা বগলের চারপাশে ব্যথা বা মাঝে মাঝে অস্বস্তিবোধ হওয়া।
কে ঝুঁকিতে
* ৪০ বছরের বেশি বয়সি নারীরা
* পারিবারিক ইতিহাস থাকলে
* অতিরিক্ত ওজন, ধূমপান ও অ্যালকোহল সেবনকারীরা
*যেসব নারীর প্রথম সন্তান জন্মায় ৩০ বছরের পরে।
কী করণীয়
প্রতি মাসে নিজের স্তন নিজে পরীক্ষা করুন। ৪০ বছরের পর থেকে নিয়মিত ম্যামোগ্রাম করান। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করুন সুষম আহার, ব্যায়াম, মানসিক প্রশান্তি, সন্দেহ হলে অবহেলা না করে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
উপসংহার
ব্রেস্ট ক্যানসার এখন আর ‘নির্বিচারে প্রাণনাশক’ রোগ নয়, যদি আমরা সচেতন হই। ‘আগে জানুন, আগেভাগে চিকিৎসা নিন’-এই মূলমন্ত্রই হোক আমাদের পথচলার প্রেরণা। অক্টোবরে গোলাপি রং শুধু প্রতীক নয়, এটি সাহস, আশা আর বেঁচে থাকার প্রতিজ্ঞা। আপনার সচেতনতাই একজন নারীর জীবন বাঁচাতে পারে। এ ছাড়া কথায় আছে-প্রতিকার নয়, এসব ক্ষেত্রে প্রতিরোধ সর্বদা উত্তম।
লেখক : এমফিল, পিএইচডি
বিডি প্রতিদিন/এমআই