যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জোরালো হচ্ছে। এবার সেই ক্ষোভ-বিক্ষোভ নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে উপহাস করলেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। তিনি ট্রাম্পকে কটাক্ষ করে বলেন, “ক্ষমতা থাকলে সেই বিক্ষোভ দমন করে দেখান।”
খামেনি তার এক্স পোস্টে জানান, বিভিন্ন প্রতিবেদনে দাবি করা হচ্ছে আমেরিকার নানা প্রান্তে লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নেমে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছেন। যদি আপনি (ট্রাম্প) এতটাই সক্ষম হন, তবে বিক্ষোভকে প্রশমিত করুন। বিক্ষোভকারীদের ঘরে পাঠান। শেষে ট্রাম্পকে কটাক্ষ করে খামেনি লেখেন, ‘‘অন্য দেশের বিষয়ে হস্তক্ষেপ না-করে, নিজের দেশের বিক্ষোভ নিয়ে ভাবুন।”
ইরানের সঙ্গে পরমাণুচুক্তি করতে চেয়ে বারবার আলোচনার টেবিলে বসার প্রস্তাব দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে ইরানের দাবি, তারা কখনওই যুক্তরাষ্ট্রের সামনে মাথা নত করবে না। যদি তাদের শর্ত মেনে চুক্তি করা হয়, তবেই আলোচনায় বসবে। দু’পক্ষের টানাপোড়েনের ফলে এখনও পর্যন্ত পরমাণু চুক্তি সম্পর্কিত আলোচনা বাস্তবায়িত হয়নি। তার মাঝেই গত জুনে ইরান-ইসরায়েল সংঘর্ষের সময়ে ইরানের পরমাণুকেন্দ্রগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছিল মার্কিন বাহিনী।
ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, মার্কিন হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইরানের পরমাণুকেন্দ্রগুলো! তবে ওই হামলায় পরমাণুকেন্দ্রগুলোর কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েই গিয়েছে।
সম্প্রতি এ প্রসঙ্গে খামেনি ট্রাম্পের উদ্দেশে করা এক সমাজমাধ্যম পোস্টে লেখেন, ‘‘আমেরিকার প্রেসিডেন্ট গর্ব করে বলে থাকেন, তারা বোমা মেরে ইরানের পরমাণুকেন্দ্র ধ্বংস করে দিয়েছেন। খুব ভাল কথা, এভাবে স্বপ্ন দেখতে থাকুন।”
এবার আরও একবার পরমাণু প্রসঙ্গ নিয়ে মুখ খুললেন খামেনি। তার প্রশ্ন, কোন দেশের হাতে পরমাণু শক্তি থাকবে, তা নির্ধারণ করার কর্তৃত্ব কে দিয়েছে ওয়াশিংটনকে?
উল্লেখ্য, শনিবার থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে ট্রাম্প এবং তার প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। লাখ লাখ নাগরিক জড়ো হন রাস্তায়। তাদের হাতে পোস্টার, কণ্ঠে স্লোগান। আর তা সবই ট্রাম্প-বিরোধী। রাজধানী ওয়াশিংটন তো বটেই, নিউ ইয়র্ক, শিকাগো, বস্টন, লস অ্যাঞ্জেলেস— প্রতিটি বড় শহরে বিক্ষোভ হয়েছে। স্লোগান উঠেছে, ‘আমেরিকায় কোনও রাজা নেই’।
বস্তুত, ট্রাম্পের একাধিক নীতিতে রুষ্ট মার্কিন জনতা। প্রতিবাদে পরিকল্পিতভাবেই শনিবারের বিক্ষোভ কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছিল। নাগরিক সংগঠন ‘নো কিংস’-এর ডাকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে মানুষ পথে নেমেছিলেন। উদ্যোক্তাদের দাবি, সবমিলিয়ে ৭০ লাখের বেশি মানুষ জমায়েত হয়েছিলেন আমেরিকার রাস্তায়। সেই বিক্ষোভ নিয়ে ট্রাম্পকে কটাক্ষ করলেন খামেনি। সূত্র: এনডিটিভি
বিডি প্রতিদিন/একেএ