লাদাখকে রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া এবং সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের আওতায় অন্তর্ভুক্তির দাবিতে লেহ শহরে বিক্ষোভকারীদের আন্দোলন সহিংসতায় রূপ নিয়েছে।
বুধবারের (২৪ সেপ্টেম্বর) এ ঘটনায় অন্তত ৪ জন নিহত এবং ৬০ জনের বেশি আহত হন। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যও রয়েছেন। ঘটনার পরপরই লেহ’র জেলাশাসক শহরজুড়ে কারফিউ জারি করেন এবং পাঁচজনের বেশি জমায়েত নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন।
বিক্ষোভকালে উত্তেজিত জনতা স্থানীয় বিজেপি অফিস ও একটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। পুলিশ সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করতে বাধ্য হয়। আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল লেহ অ্যাপেক্স বডি (এলএবি)-এর যুব শাখা। তারা লাদাখের রাজ্যের মর্যাদা ও ষষ্ঠ তফসিলে অন্তর্ভুক্তির দাবিতে আন্দোলন চালাচ্ছিল।
এলএবি সভাপতি থুপস্তান সোয়াং জানান, আমরা লাদাখের চারটি বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছি। আজকের সহিংসতায় আমাদের কয়েকজন যুবক শহীদ হয়েছেন। তাদের ত্যাগ বৃথা যাবে না।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের পর লাদাখ জম্মু-কাশ্মীর থেকে আলাদা হয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হয়। সে সময় এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানানো হলেও বর্তমানে অনেকেই রাজ্যের মর্যাদা ফেরানোর দাবিতে সরব।
জলবায়ু কর্মী সোনম ওয়াংচুকের নেতৃত্বে গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ৩৫ জন মানুষ অনশন শুরু করেন। এর মধ্যে দুজন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপর ক্ষিপ্ত হয়ে আন্দোলনকারীরা রাস্তায় নেমে শহর অচল করে দেওয়ার ডাক দেন। এ সময় পাথর নিক্ষেপে উত্তেজনা বাড়ে।
সহিংসতার পর অনশন প্রত্যাহার করেন সোনম ওয়াংচুক। তিনি টুইটে লিখেন, আমি শান্তির বার্তা দিলেও তা ব্যর্থ হয়েছে। যুব সমাজকে আহ্বান জানাচ্ছি সহিংসতার পথ ত্যাগ করতে। এতে আমাদের প্রকৃত উদ্দেশ্য বিঘ্নিত হবে। তিনি আরও বলেন, গত পাঁচ বছর ধরে আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। কিন্তু তরুণদের হতাশা বেকারত্ব ও নানা সমস্যার কারণে। তবে সহিংসতার পথ গ্রহণ করা ভুল।
অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় সরকার সহিংসতার জন্য সোনম ওয়াংচুককে দায়ী করেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, অনশন চলাকালে তিনি উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করেন এবং বিদেশি আন্দোলনের উদাহরণ টেনে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করেন। তার ওই বক্তব্যেই একদল আন্দোলনকারী রাজনৈতিক দল ও সরকারি অফিসে হামলা চালায়।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ