গোপালগঞ্জে জেলা পর্যায়ে গ্রাম আদালত কার্যক্রমের বার্ষিক অগ্রগতি পর্যালোচনা ও করণীয় শীর্ষক সভা অনুষ্ঠিত হয়। বৃহস্পতিবার পৌর মিলনায়তন সন্মেলন কক্ষে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান। সভায় সভাপতিত্ব করেন পৌর প্রশাসক ও উপপরিচালক স্থানীয় সরকার বিভাগ বিশ্বজিত কুমার পাল। জেলা প্রশাসক তার আলোচনায় বলেন, আপনারা এখানে যার যার এলাকার জনপ্রতিনিধি তাই সাধারন জনগনকে আপনাদের বিচারিক সুবিধা দিতে হবে কারন আপনারা জনগনের সেবক। গ্রাম আদালত যেহেতু সর্বোচ্চ ৩,০০০০০/- তিন লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিরোধ সমাধান করতে পারে তাই ছোটখাটো বিরোধ গুলো এই গ্রাম আদালতের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করতে হবে। গ্রাম আদালতের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে না সে সকল মামলা আপনারা গ্রাম আদালতে মাধ্যমে নিষ্পত্তি করবেন না। তিনি আরো বলেন ইউনিয়ন পরিষদে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায় বেশ কিছু ইউনিয়নে গ্রাম আদালতের কার্যক্রম ভালো ভাবে চলছে আবার কিছু ইউনিয়নের কাজ ভালো না। তাই সকলকে ভালো কাজ করার উদ্যোগ গ্রহণ করত হবে। সকলের উদ্দেশ্যে বলেন, গ্রাম আদালতের মামলা গ্রহণ ও নিষ্পত্তির হার বাড়াত হবে এবং গোপালগঞ্জ জেলা সব জেলার চেয়ে এগিয়ে থাকবে এই বিষয়ে সকলের সহযোগীতা কামনা করেন।
গত ১ বছরের মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রমের পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে উপস্থাপন করেন মোঃ আলিউল হাসানাত খান, ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার, এভিসিবি-৩ প্রকল্প। তিনি অবহিত করেন গোপালগঞ্জ জেলায় ৬৭ টি ইউনিয়ন পরিষদে বিগত জুলাই ২৪ থেকে জুন ২০২৫ পর্যান্ত মোট মামলা দায়ের করা ৭৭১ টি এর মধ্যে উচ্চ আদালত থেকে ৮০টি মামলা গ্রাম আদালতে প্রেরন করা হয়েছে। জেলায় মোট ৬৯৭টি মামলা নিষ্পত্তি করা হয়েছে যার মাধ্যমে ৯০,৬৮,৭২০/- টাকা আদায় করা হয়েছে। ওয়েভ ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি জনাব নজরুল ইসলাম, প্রকল্প সমন্বয়কারী তার আলোচনায় বলেন, গ্রাম আদালতের এই কাজটি স্থায়ী করণ করতে হবে। আর এরজন্য বিভাগ, জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়নে গ্রাম আদালতের ডেস্ক থাকতে হবে। তিনি আরো বলেন জেলা ডিআরটি সদস্য এবং উপজেলা ইউআরটি সদস্যদের বেশি একটিভ থাকতে হবে। তারা তাদের বিভিন্ন প্রোগ্রামে গ্রাম আদালতের তথ্য শেয়ার করবেন যাতে সাধারন জনগন ইউনিয়ন পরিষদের সেবা সম্পর্কে জানতে পারে। সভায় বিভিন্ন চেয়াম্যান গ্রাম আদালতে সফল করার বিষয়ে বিভিন্ন প্রস্তবনা তুলে ধরেন।
উল্লেখ্য, বিগত ১ বছরে গ্রাম আদালতের মামলা গ্রহনে ১ম স্থান অধিকার করেছে কাশিয়ানী উপজেলার ফুকরা ইউনিয়ন পরিষদ, ২য় স্থান অধিকার করেছে কাশিয়ানী উপজেলার সাজাইল ইউনিয়ন পরিষদ এবং ৩য় স্থান অধিকার করেছে কোটালীপাড়া উপজেলার বান্ধাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ। ভালো কাজের অবদান স্বরুপ এই ৩টি ইউনিয়ন পরিষদকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা স্মারক দেওয়া হয়।
সভা সঞ্চালনা করেন এস এম আমিরুল মোস্তফা, সহকারী কমিশনার , স্থানীয় সরকার শাখা। উল্লেখ্য সভায় গোপালগঞ্জ জেলার ৫ টি উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ডিআরটি সদস্য এবং ৬৭ টি ইউনিয়ন পরিষদরে চেয়ারম্যান/প্যানেল চেয়ারম্যানগণ সহ মোট ৯০ জন অংশগ্রহণ করেন।
বিডি প্রতিদিন/এএম