ভারত এবং পাকিস্তানের যুদ্ধাবস্থা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ। এমন অবস্থায় উভয় দেশকে শান্ত থাকতে এবং সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানানো হয়েছে। আঞ্চলিক শান্তির স্বার্থে কূটনৈতিক সমাধান আশা করেছে বাংলাদেশ। গতকাল এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের এ অবস্থানের কথা জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশের অবস্থান জানিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ভারত এবং পাকিস্তানের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ সরকার। এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। পাশাপাশি উভয় দেশকে শান্ত থাকা, সংযম প্রদর্শন এবং পরিস্থিতি ঘোলাটে হয় এমন পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছে। বিবৃতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, আঞ্চলিক শান্তি, প্রগতি এবং স্থিতিশীলতার মনোভাব থেকে বাংলাদেশ আশা করছে, কূটনৈতিক উদ্যোগের মাধ্যমে উত্তেজনা কমে আসবে এবং এ অঞ্চলের মানুষের মঙ্গলের স্বার্থেই শান্তি বজায় থাকবে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের তথ্যানুসারে, কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার বদলা নিতে ভারত বুধবার প্রথম প্রহরে পাকিস্তান ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। জবাবে পাকিস্তান ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে গোলাবর্ষণ করে। এ পরিস্থিতিতে পরমাণু শক্তিধর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ব।
সীমান্তে সতর্ক থাকার নির্দেশ : ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান সংঘাত নিয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ এশিয়ার এ দুই পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশীর এমন সংঘাত গোটা অঞ্চলে ভয়াবহ প্রভাব ফেলতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে সীমান্তঘেঁষা সব জেলার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সজাগ দৃষ্টি এবং সব ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। ইতোমধ্যে সীমান্তরক্ষী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) সীমান্তের সব জেলার সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন। গতকাল রাজধানীর গুলশানে বাংলাদেশ শুটিং স্পোর্টস ফেডারেশনে ‘বাংলাদেশ পুলিশ বার্ষিক শুটিং প্রতিযোগিতা এবং আইজিপি কাপ-২০২৪’-এর চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে আইজিপি বাহারুল ইসলাম বলেন, ‘ভারত ও পাকিস্তানের সংঘাত কেন্দ্র করে বাংলাদেশের নিরাপত্তা যেন বিঘ্নিত না হয়, কোনো জঙ্গি বা সন্ত্রাসী যেন দেশে প্রবেশ করতে না পারে এজন্য সীমান্তঘেঁষা সব জেলার পুলিশ সুপারকে সতর্ক করা হয়েছে। ভারতের সঙ্গে আমাদের সীমান্তবর্তী ৩০টি এবং মিয়ানমারের সঙ্গে তিনটি জেলা রয়েছে। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করব যেন এর পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয়।’
জানা গেছে, সীমান্তে যে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি রোধে বিজিবি প্রস্তুত ও সতর্ক রয়েছে। একই সঙ্গে সতর্ক রয়েছে কোস্টগার্ডসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী অন্যান্য বাহিনী। যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে তাদের পক্ষ থেকে স্ব স্ব বাহিনীকে প্রস্তুত ও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। এদিকে ভারত-পাকিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে উভয় দেশকে শান্ত, সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা। পরিস্থিতি আরও খারাপ করতে পারে এমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান বাংলাদেশের।