বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেক মন্ত্রী মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমদ বীরবিক্রম বলেছেন, ‘পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধে আমাদের নিরপেক্ষ থাকা উচিত। আমরা কারও পক্ষ নেব না। দেশ দুটির উচিত অনতিবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করা।’ ‘পাক-ভারত যুদ্ধ’ শুরুর পর এ নিয়ে গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে তিনি উপরোক্ত প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বশান্তির পক্ষে। মানবাধিকারের পক্ষে অতীতেও ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকব। সুতরাং আমরা এ ধরনের সংঘাতে জড়াতে চাই না।’
বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, ‘পাকিস্তান-ভারতে এত কী পরিস্থিতি হচ্ছে, আমাদের পক্ষে জানাও খুবই মুশকিল, প্রকৃত দোষী কারা? কাদের অন্যায়ের জন্য ব্লেম করা হবে, এত ক্লিয়ার ধারণা আমাদের নাই। বাংলাদেশের নিরপেক্ষ থাকা উচিত। আমাদের যে অর্থনীতি, আমাদের যে সেনাবল, আমাদের যে অবস্থান-আমরা এ ধরনের দুটি পরমাণু শক্তিধর দেশের সংঘাতে কারও পক্ষ নেব না। আমাদের প্রয়োজন নিজের দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো করা।’
পাক-ভারত যুদ্ধে আমাদের দেশের জন্য কোনো শঙ্কা আছে কি না?-এ প্রসঙ্গে মেজর (অব.) হাফিজ বলেন, ‘দেশ দুটি যদি এ যুদ্ধে নিউক্লিয়ার অস্ত্র ব্যবহার করে, তাহলে সে জীবাণুগুলো তো বাতাসে ভেসে আসে এবং এসব গোলাবারুদের অস্ত্র অনেক সময় টার্গেট ভেদ করেও ওভার-হাইড করে চলে আসে। সে ক্ষেত্রে আশপাশের দেশগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে; যদি নিউক্লিয়ার অস্ত্র তারা ব্যবহার করে। আমরা চাই অনতিবিলম্বে জাতিসংঘের অধীনে এ দুই দেশের মধ্যকার যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেওয়া হোক।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ দুটি দেশ দীর্ঘদিন ধরেই এ অঞ্চলটা অস্থিতিশীল করে রেখেছে। কাশ্মীরের ব্যাপারে জাতিসংঘ যত কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বিশেষ করে সিকিউরিটি কাউন্সিল থেকে যতগুলো সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তার কোনোটাই ভারত মানেনি। ভারত সব লঙ্ঘন করেছে। ভারত বর্তমানে একটা হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্র। তারা মুসলমানদের সব সময় সারা বিশ্বে দমানোর জন্য চেষ্টা করে। তার প্রমাণ হলো একমাত্র ইসরায়েল এখন ভারতকে সাহায্য করছে। ভারতের পক্ষ অবলম্বন করেছে। সুতরাং এটা একটা অ্যান্টি মুসলিম শক্তি। সারা বিশ্বে মুসলমানদের পদানত করার জন্য চেষ্টা করছে। তার পরও আমরা যুদ্ধ চাই না। শান্তি চাই। পাক-ভারত যুদ্ধ তো লেগেই গেছে। তবে এটা যেন আর লার্জেস্ট স্কেলে না করে, না ছড়ায়। বর্তমান বিশ্বে, বিশেষ করে তৃতীয় বিশ্বের এসব দেশ পাকিস্তান, ভারত, বাংলাদেশ-আমরা তো যুদ্ধ এফোর্ট করতে পারি না। আমাদের দেশের মানুষ খেতে পায় না। বিশাল একটা জনসংখ্যা এখনো দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। সুতরাং এসব যুদ্ধ আমাদের জন্য বিলাসিতা। কেবল রাজনৈতিক নেতাদের তাদের ‘ইগো স্যাটিসফাই’ করার জন্য, কিংবা কোনো আন্তর্জাতিক শক্তিসমূহের অস্ত্র বিক্রির জন্য এ ধরনের যুদ্ধ তাদের পক্ষ থেকে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়। যে কোনোভাবেই ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশকেই যুদ্ধ থেকে বিরত থাকা উচিত।’