ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, আয়কর রিটার্ন দাখিল বা ভ্যাট আদায়-প্রক্রিয়া এখনো অনলাইন করা যায়নি, কাগুজে পদ্ধতিই এখনো রাজস্ব আদায়ের বড় ভরসা। হয়রানি ও দুর্নীতি কমেনি। চালান জালিয়াতি নিয়ন্ত্রিত হয়নি, কর ফাঁকি আর অর্থ পাচার নিয়ন্ত্রিত হয়নি। তিনি বলেন, দেশের কর জিডিপির অনুপাতও বাড়েনি বরং কমে গেছে। ২০২৪ অর্থবছরে তা নেমে এসেছে ৮.৫-এ, ঠিক এক যুগ আগে যা ছিল ৯.১ শতাংশ। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিবৃতিতে তিনি এসব বলেন। টিআইবি বলছে, রাজস্ব আদায় বাড়াতে এবং সরকারি ব্যয় ব্যবস্থাপনা ও নিরীক্ষা কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আনতে ডিজিটাইজেশন ও অটোমেশনে বেশ কয়েক দফা প্রকল্প নেওয়া হলেও খুব একটা কাজে আসেনি। কিন্তু এসব প্রকল্প কেন উদ্দেশ্য পূরণ করতে পারল না? তার কারণ অনুসন্ধান ও সমাধানের পথ অবলম্বন ছাড়াই আবারও বিপুল অঙ্কের অর্থ খরচের প্রকল্প নিতে যাচ্ছে সরকার। পুরোনো প্রকল্পের ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা গ্রহণ ব্যতিরেকে দাতা সংস্থার প্রেসক্রিপশনের অন্ধ অনুসরণে নতুন প্রকল্প নেওয়া অপরিণামদর্শী ও সরকারি অর্থের শ্রাদ্ধ হবে। এসব প্রকল্প যে উদ্দেশ্য পূরণ করতে পারেনি তার বড় প্রমাণ, নতুন করে বিশ্বব্যাংকের ঋণনির্ভর হাজার কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণের প্রয়াস। ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আয়কর আদায় ব্যবস্থাপনা অটোমেশন করার জন্য ঠিকাদার যে সফটওয়্যার সরবরাহ করে তা শেষ পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়নি, বরং পরে দেশেই স্বল্প ব্যয়ে আরেকটি ই-রিটার্ন ফাইলিং ব্যবস্থা তৈরি করা হয়।
তিনি বলেন, সাধারণত প্রযুক্তি বা সফটওয়্যার যারা সরবরাহ করেন তারাই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় লোকবলের প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা উন্নয়নের কাজ করেন। সেখানে কোন বিবেচনায়? কার স্বার্থে? ধার করা টাকায় এমন একটি বিশেষায়িত সেন্টার গড়ে তোলার সুযোগ রাখা হচ্ছে তা খতিয়ে দেখতে হবে। এক্ষেত্রে রাজস্ব বিভাগকে দীর্ঘমেয়াদে উদ্দেশ্যমূলকভাবে কোনো একটি নির্দিষ্ট প্রোপ্রাইটরি সফটওয়্যার ব্যবহারে জিম্মি করে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে কি না, সেটিও মাথায় রাখতে হবে। যোগ্যতা ও সম্ভাবনা থাকা সাপেক্ষে দেশজ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানকেও এ ধরনের কাজে যুক্ত করার বিষয়টি উন্মুক্ত রাখার ওপর সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিতে হবে।