দুই বাংলার সিনে দুনিয়ার তুমুল জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। সেলুলয়েড পর্দায় যার অভিনয় মানেই অন্যরকম নান্দনিকতা। এ তারকা এবার ‘জিম্মি’র পর ‘জয়া আর শারমিন’ নিয়ে ১৬ তারিখে প্রেক্ষাগৃহে হাজির হচ্ছেন, যেটি কভিডের সময় বানিয়েছিলেন পিপলু আর খান। সমসাময়িক ব্যস্ততা নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল
অবশেষে পাঁচ বছর পর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে আপনার সিনেমা...
আসলে আমরা কভিড-১৯ মহামারির সময় ‘জয়া আর শারমিন’ ছবিটার শুটিং করি। যখন সবাই বাড়ি থেকে প্রায় অবসাদে ডুবে যাচ্ছিলেন। তখনো অল্প ইউনিট নিয়ে ছবিটি ক্যামেরাবন্দি করা হয়। কিন্তু ছবিটা বেশ বড়। আলাদা সামাজিক অবস্থানে বেড়ে ওঠা দুই নারীর বন্ধুত্বের গল্প। এটি একেবারে আলাদা রকম এক চিত্রনাট্যভিত্তিক চলচ্চিত্র যেখানে নারী সম্পর্ক, আত্মোপলব্ধি এবং সামাজিক নিঃসঙ্গতা গভীরভাবে উঠে এসেছে। দুই নারী এক বাড়িতে আটকা পড়ে যায়। সেই অচেনা পরিবেশে ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে এক সম্পর্কের জটিল অবয়ব, যে সম্পর্ক বন্ধুত্বেরও হয় না আবার স্রেফ সহাবস্থানেরও নয়। বরং সময়ের ভারে তারা নিজের ভিতরে নিজেকে খুঁজে পেতে থাকে। অনেক দিন পর সিনেমাটি মুক্তি পেতে যাচ্ছে। এটা খুব স্পেশাল একটা প্রজেক্ট আমার জন্য। পাঁচ বছর আগে আমরা এর শুটিং করেছিলাম। তখন কেউ ভাবেনি যে মুক্তি পেতে এত সময় লেগে যাবে। কিন্তু এখন যেহেতু ছবিটি বড় পর্দায় আসছে সেটা নিয়ে আমি খুবই রোমাঞ্চিত।
সিনেমাটি এখনকার দর্শকদের কতখানি ভাবাবে?
এটা এমন একটি সিনেমা, যা শুধু গল্প শোনাবে না, বরং দর্শকের মনে কিছু প্রশ্নের জন্ম দেবে। সম্পর্ক, নিঃসঙ্গতা, সময় ও সমাজ- সব মিলিয়ে এটি একটি মানসিক আলোড়ন তোলা অভিজ্ঞতা হবে। এটা কেবল দুই নারীর গল্প নয়, বরং দুটি ভিন্ন সত্তার নিজস্ব এক জগৎ তৈরির প্রচেষ্টা। কভিডকালে আমরা সবাই এক ধরনের বন্দিত্বে ছিলাম, এ সিনেমায় সেই মানসিক অভিজ্ঞতার প্রতিফলন ঘটেছে।
ব্যক্তিগত জীবনেও জয়া বাসার গৃহকর্মীর সঙ্গে নিজের কোনো বিভাজন দেখেন কি?
আসলেই দেখি না। আমার মা, ভাইবোন, পোষ্য এরা যেমন পরিবার, আমার সহকারীরাও আমার বাড়ির লোক।
‘জিম্মি’ নিয়ে দর্শক সাড়া কেমন ছিল?
ভালোই তো বলব। দর্শক ভালোভাবেই নিয়েছে। দেখেছে। আমার আম্মা কিন্তু কখনোই আমার কোনো কাজ দেখে খুব বেশি উচ্ছ্বসিত হন না। আম্মা ‘জিম্মি’ দেখেছেন রাত ১২টার সময়, ঈদের আগের দিন। ওই সময়টায় সাধারণত আম্মা ঘুমিয়ে পড়েন। আম্মার ভালো লেগেছে এ কারণে বুঝলাম- যখন মা ঘুমালেন না, শেষ পর্যন্ত দেখলেন। ততক্ষণে আমি বুঝতে পেরেছি, ‘জিম্মি’ তাঁর ভালো লেগেছে।
তাণ্ডবে চরিত্র ও লুক নিয়ে কিছু বলা যায়?
ছবিটির কাজ তো এখনো অনেক বাকি আছে। শেষ হলে সব জানতে পারবেন।
শাকিব খানের সঙ্গে ফের সিনেমায় কাজ করছেন। এখনকার শাকিব কতটা পরিণত?
অনেকটাই। আগের থেকে তিনি অনেক বেশি পরিণত। বিশেষ করে ওনার ডেডিকেশন লেভেলটা আগের থেকে বেড়েছে। এখন যেটা করেন, ভেবেচিন্তে করেন। চরিত্র, লুক ও গল্প নির্বাচনে চুজি হয়েছেন। আমি তাঁর এখনকার কাজকে খুবই অ্যাপ্রিশিয়েট করি।
ইন্ডাস্ট্রির জন্য কী পদক্ষেপ দরকার?
একটি প্রপার ইনস্টিটিউট দরকার। আমাদের আলাদা আলাদা ফিল্ম ডিপার্টমেন্ট দরকার। মেকআপ, কস্টিউম, লাইট, হেয়ার ডিপার্টমেন্ট আরেকটু গোছানো প্রয়োজন। আরও অনেক বিষয় রয়েছে, তবে এক এক করে সব ঠিক করতে হবে।
আপনার প্রেম-বিয়ে নিয়ে ভক্তদের মাঝে অনেক প্রশ্ন...
আমার প্রেমটা দর্শকদের নিয়ে, আমার কাজ নিয়ে। আসলে অনেক আগেই হয়ে গেছে এটা। আমার সিনেমার কাজের সঙ্গে যেটা সত্যিকার অর্থে আমার বড় প্রেম। দর্শক রাগ করুক বা বলুক যে জয়া একঘেয়ে কথা বলে; কিন্তু আমার প্রেম বিয়ে সংসার সবকিছুই ওই অভিনয়ের সঙ্গেই। আর সবসময় একটা কথাই বলি, আমি কখনো রোডম্যাপ করে চলি না। যদি কখনো ইচ্ছা হয়, বিয়েশাদি করেই নিতে পারি। কিন্তু আপাতত এ মুহূর্তে কোনো প্ল্যান নেই।
ভক্তদের উদ্দেশে কিছু বলবেন?
দর্শকদের কাছে আমার সব সময় কৃতজ্ঞতা এবং সেটা আন্তরিকভাবে। আমি খুবই সাধারণ একজন মানুষ, আর সেই জায়গা থেকে আপনারা আমাকে একটি জায়গা দিয়েছেন আমাকে ভালোবেসেছেন। সে জন্য কৃতজ্ঞ।