বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতকে টেকসই, স্থিতিস্থাপক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পথে উন্নীত করতে এবং পরিবেশগত ও সামাজিক মানদণ্ড (ই এস জি) বৃদ্ধির লক্ষ্যে ঢাকায় দিনব্যাপী মতবিনিময় সভা ও প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সুইডেন ও সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের অর্থায়নে এবং সুইসকন্ট্যাক্ট বাংলাদেশের বাস্তবায়নে পরিচালিত প্রগ্রেস (প্রমোটিং গ্রিন গ্রোথ ইন দি রেডিমেড গার্মেন্টস সেক্টর থ্রু স্কিলস) প্রকল্পের আওতায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে বিভিন্ন কারখানার মালিক, আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের প্রতিনিধি, স্থানীয় পরামর্শদাতা, শিল্প সংগঠন, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, প্রযুক্তি সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান, এনজিও এবং উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের দুই শতাধিক অংশগ্রহণকারী উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী বক্তব্যে সুইসকন্ট্যাক্ট বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হেলাল হোসেন বলেন, বৈশ্বিক বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে আমাদেরকে সমাধানের অংশ হতে হবে। কার্বন নির্গমন কমানো, শক্তি দক্ষতা বৃদ্ধি এবং উৎপাদন ব্যবস্থায় স্থিতিশীলতা তৈরি করার দিকে নজর দিতে হবে। একই সঙ্গে আমাদের অংশীদার কারখানাগুলোকে টেকসই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে, দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে হবে এবং সবুজ বিনিয়োগের দিকে অগ্রসর হতে হবে, যাতে পুরো খাতটি টেকসই ও প্রতিযোগিতামূলক থাকে।
সুইডেন দূতাবাসের ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন শাখার উপ-প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) নায়োকা মার্টিনেজ ব্যাকস্ট্রোম তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, টেকসইতা কেবল একটি গন্তব্য নয়, এটি একটি যৌথ যাত্রা। বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিটি জায়গা, প্রতিটি ক্ষেত্রের উপর প্রভাব ফেলছে। তাই আমাদের এই মানদণ্ডগুলোকে সমগ্রভাবে দেখা এবং শিল্প ও ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড কীভাবে টেকসইতায় অবদান রাখছে তা মূল্যায়ন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি আরো বলেন, আমরা ২০৫০ সালের মধ্যে নেট-জিরো অর্জনের লক্ষ্যে ফ্যাশন শিল্পের অংশ হতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এটি সম্ভব, যদি আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করি। নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সক্রিয় অংশগ্রহণ এই প্রক্রিয়াকে আরও কার্যকর করবে।
অনুষ্ঠানে প্রগ্রেস-এর সহায়তায় তৈরি পাঁচটি কারখানার সাসটেইনেবিলিটি রিপোর্ট উন্মোচন করা হয়। আল-ইসলাম গার্মেন্টস-এর জেনারেল ম্যানেজার এম. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, নিরাপদ কর্মপরিবেশ, ন্যায্য শ্রমনীতি ও পরিবেশগত দায়বদ্ধতার উপর গুরুত্ব দিয়ে আমরা আমাদের কর্মী, সমাজ এবং পৃথিবীকে আরও উন্নত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এছাড়াও স্থানীয় সেবা প্রদানকারীদের প্রদর্শনী এবং টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য স্থানীয় সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনার আয়োজন করা হয়। এরপর শিল্প বিশেষজ্ঞ, আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড প্রতিনিধি, উন্নয়ন সহযোগী, পরামর্শক এবং শিক্ষাবিদদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় প্যানেল আলোচনা।
এ আলোচনার মূল বিষয় ছিল 'নেভিগেটিং টু দি পাথ টু নেট - জিরো বাই ২০৫০: এ রিয়েলিটি চেক ফর দি আর এম জি সেক্টর'। বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানো, টেকসই অর্থায়নের সুযোগ উন্মোচন এবং ব্র্যান্ড-কারখানা যৌথভাবে দায়িত্ব নেওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের পোশাক খাত বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারবে।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ