ধান ও গমের মতো আলুর মূল্য সরকার কর্তৃক নির্ধারণের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে নওগাঁর আলু চাষীরা। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নওগাঁ সদর উপজেলা পরিষদের সামনে দাঁড়িয়ে এ কর্মসূচি পালন করেন চাষীরা। নওগাঁ, বগুড়া ও জয়পুরহাট জেলার কৃষক পরিবার এবং আলু ব্যবসায়ী পারিবারের ব্যানারে এ প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
কৃষকরা বলেন, বাজারে আলুর দাম উৎপাদন খরচের অর্ধেকেরও নিচে। প্রতি কেজি আলুতে ১৭-১৮ টাকা লোকসান হচ্ছে। বিভিন্ন ব্যাংক এবং এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে আলু চাষ করায় বাজারে দাম না পয়ে সেই টাকা পরিশোধ করতে পারছেন না। এমন অবস্থায় সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন তারা।
নওগাঁ সদর উপজেলার চকবাড়িয়া গ্রামের কৃষক আব্দুল জলিল বলেন, সার-কিটনাশকের দাম অনেক বেশি, সেই হিসেবে শুরু থেকেই এ বছর আলুর দাম নেই। খরচের টাকাই উঠছে না। ধান-চালের সরকারি মূল্য নির্ধারণ করতে পারলে আলুর কেনো হবে না? সরকারের কাছে দাবি জানাই দ্রুত আলুর মূল্য যেনো নির্ধারণ করে দেয়।
নওগাঁ সদর উপজেলার বক্তারপুর গ্রামের কৃষক বুলবুল ইসলাম বলেন, বাজারে ধানের দাম বেশি চালের দামও বেশি। কিন্তু আলুর কোন দাম নাই। হিমাগারেও খরচ বেশি নেওয়া হচ্ছে। এক মণ আলু চাষ করতেই ১২০০-১৩০০ টাকা করে খরচ হয়েছে। বাজারে এখন আলু বিক্রিই করতে হচ্ছে ৫০০-৬০০ টাকা মণ। তাহলে আমরা যাবো কোথায়? সরকার যদি আমাদের জন্য কোন উদ্যোগ না নেয় তাহলে আমরা শেষ হয়ে যাবো।
নওগাঁ শহরের বালুডাঙ্গা এলাকার আলু চাষী সাইফুল আলম বলেন, গরু বিক্রি করে এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে লাভের আশায় আলু চাষ করেছিলাম। কিন্তু বাজারে এখন আলু বিক্রি হচ্ছে না। হিমাগারে প্রতি কেজি আলুতে আগের থেকে ৪ টাকা করে বেশি দিতে হচ্ছে। এক কেজি আলু উৎপাদনসহ হিমাগারে রাখতে ২৫-২৬ টাকা খরচ হচ্ছে। বাজারে পাইকারি দরে ১১-১২ টাকার বেশি দামে আলু বিক্রি হচ্ছে না। ঋণের টাকা পরিশোধ করা তো দূরের কথা খরচের টাকা উঠানো নিয়েই এখন চিন্তায় আছি।
এ বিষয়ে নওগাঁ কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের বিপণন কর্মকর্তা সোহাগ সরকার বলেন, এ বছর ফলন ভালো হওয়ায় আলুর উৎপাদন চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি হয়েছে। বছরের এই সময়টাতে অন্যান্য সবজি বাজারে বেশি থাকায় মানুষ আলু কম কিনে। সরকারের পক্ষ থেকে ওএমএস অথবা টিসিবির মাধ্যমে আলু বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ