একসময়ের ভবঘুরে ফেরিওয়ালা আজিজুল বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলা শাসন করেছেন। তিনি উপজেলায় আওয়ামী লীগের শীর্ষ দুই পদ আঁকড়ে ছিলেন ১৬ বছর। উপজেলায় ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ পদ ছিল তার শক্তির আঁতুড়ঘর। গুণ্ডাবাহিনী দিয়ে সাধারণ মানুষের জমি দখল ছিল আজিজুলের এক তুড়ির কাজ।
সেই আজিজুলকে এবার অবৈধভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহারের দায়ে চার বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই সাথে এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছে আদালত। বুধবার (৯ জুলাই) দুপুরে বগুড়ার বিদ্যুৎ আদালতের স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট এজিএম মনিরুল হাসান সরকার এই রায় দেন।
রায় ঘোষণার সময় আসামি আজিজুল আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন। আজিজুল হক বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলা পৌর এলাকার বানাইল মহল্লার মৃত মোজাম্মেল হকের ছেলে।
বগুড়ার বিদ্যুৎ আদালতের পেশকার সৈয়দ শফিউল আলম জানান, গত বছরের ১১ নভেম্বর দুপুরে শিবগঞ্জ পৌর এলাকার বানাইল কলেজ পাড়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় মিটার পরিদর্শনে দেখা যায়, আজিজুল হক তার নিজ বাড়িতে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়েছেন। প্রায় ১৮ মাস ধরে অবৈধভাবে ১১টি ফ্যান, ২৯টি লাইট, দু’টি ফ্রিজ, একটি টিভি, একটি এসি, একটি রাইস কুকার ও একটি পানির পাম্পে বিদ্যুৎ ব্যবহার করেছেন। এতে ১১ লাখ ৩২ হাজার ৫৮৪ টাকা অবৈধভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহারের ফলে সরকারি রাজস্ব ক্ষতি সাধন করেছেন তিনি। এ ঘটনায় শিবগঞ্জ উপজেলা নেসকো’র বিদ্যুৎ সরবরাহ এলাকার সহকারী প্রকৌশলী বেলায়েত হোসেন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। বিদ্যুৎ আদালতে বুধবার ওই মামলার সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে এই রায় ঘোষণা করেন।
তিনি আরো জানান, আসামি পলাতক থাকায় যেদিন গ্রেপ্তার বা আত্মসমর্পণ করবে সেদিন থেকে রায় কার্যকর করা হবে। তবে বর্তমানে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্টের পর থেকে আজিজুল হক পলাতক রয়েছেন। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে হত্যা, নাশকতা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে প্রায় ৯ থেকে ১০টি মামলা রয়েছে। এছাড়া আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে তার বিরুদ্ধে ধান লুট, জমি দখল, শ্মশান দখলসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল