সারা বছরজুড়ে যানজটের এক পরিচিত চিত্র দেখা যায় শেরপুর পৌর শহরে। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ২টা পর্যন্ত এবং সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মূল শহরে ট্রাফিক জ্যাম লেগেই থাকে। তবে দশ রোজার পর এই অবস্থার আরও ভয়াবহ রূপ নেয়।
আগের অন্তত ১০টি ঈদে শহরের যানজট কমাতে প্রশাসন ১৫ রোজার পর শহরের প্রবেশপথের চারটি মোড় সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বন্ধ করে রাখত। এতে শহরের যানজট কিছুটা কমলেও বাজারে কেনাকাটা করতে আসা মানুষের কষ্ট হতো। তবে এবার এখন পর্যন্ত প্রশাসন কোনো মোড় বন্ধ করেনি।
১৫ রোজা পর্যন্ত শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থা কিছুটা ভেঙে পড়লেও পুলিশের দ্রুত সিদ্ধান্তে মূল পয়েন্টগুলোতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ট্রাফিক পুলিশ ও সাধারণ পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
গত কয়েক দিন ধরে ইফতারের পর ঈদের বাজার করতে নারী-পুরুষের ঢল নামে। এত মানুষের ভিড় ও শহরের অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, রিকশা সামলাতে পুলিশকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে ২০ রোজার পর থেকে প্রতিদিন ইফতারের পর জেলা পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম সিভিল পোশাকে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে মাঠে নেমেছেন। হেঁটে হেঁটে মধ্যরাত পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে তিনি সরাসরি অবস্থান করছেন এবং যানজট নিরসনে কাজ করছেন।
এসপির এমন উপস্থিতিতে সকল পুলিশ সদস্যই আন্তরিকভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। এতে শহরে রোজা ও ঈদ বাজারে ট্রাফিক ব্যবস্থায় কিছুটা স্বস্তি এসেছে।
শহরবাসী ও বাজারে আসা ক্রেতারা বলছেন, “যানজট নেই বলা যাবে না, তবে আগের মতো অসহনীয়ও নয়।”
নিরবচ্ছিন্ন ঈদযাত্রা নিশ্চিত করতে জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা থেকে শুরু করে কনস্টেবল পর্যন্ত সকলে আন্তরিকভাবে কাজ করছেন। যানবাহন চালকরাও পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন।
পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম বলেন, “শেরপুরের মানুষ যেন নিরাপদে ও শান্তিতে ঈদ উদযাপন করতে পারে, সে লক্ষ্যে আমরা সার্বক্ষণিক মাঠে অবস্থান করছি। জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে নিরলসভাবে কাজ করছি। ৫ আগস্টের আন্দোলনে বিপর্যস্ত পুলিশের মনোবল শক্ত রাখতে নিজেই ট্রাফিকিং করছি। তবে আজ-কালের মধ্যে শহরের প্রবেশপথগুলোতে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা হতে পারে।”
তিনি আরও জানান, শেষ পর্যন্ত সুশৃঙ্খল ঈদযাত্রা নিশ্চিত রাখতে জেলা পুলিশ সর্বোচ্চ নজরদারি চালিয়ে যাবে।
বিডি প্রতিদিন/আশিক