জেলা শহরের সঙ্গে মির্জাগঞ্জ উপজেলার মানুষের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম পটুয়াখালী-মির্জাগঞ্জ-বেতাগী ভায়া বীণাপাণি কচুয়া আঞ্চলিক সড়ক। এ সড়ক দিয়ে মির্জাগঞ্জ ছাড়াও পাশের জেলা বরগুনার চারটি উপজেলার মানুষ চলাচল করে। বিকল্প সড়কপথ হিসেবে খুলনার সঙ্গে পটুয়াখালী-ভোলা হয়ে চট্টগ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে এ সড়ক দিয়ে। যথাসময়ে মেরামত না করা এবং অবাধে অতিরিক্ত ওজনের যান চলাচল করায় সড়কের পিচ ও পাথর উঠে হয়েছে বড় বড় খানাখন্দ। বৃষ্টি হলেই এতে জমে পানি। তখন হেঁটে চলা দায় হয়ে যায়। বেশি দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে সড়ক সংলগ্ন বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীরা। এ সড়কে ঝুঁকি নিয়ে হেলেদুলে চলাচল করে যানবাহন। প্রায়ই ভারী যানবাহন গর্তে আটকে যায়। ঘটে ছোটবড় দুর্ঘটনা।
জানা যায়, ১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এই সড়কের পটুয়াখালী চৌরাস্তা এলাকা থেকে মির্জাগঞ্জের সুবিদখালী পর্যন্ত ৯ কিলোমিটারের অবস্থা খুবই খারাপ। বিকল্প না থাকায় মির্জাগঞ্জের প্রায় ২ লাখ মানুষ বাধ্য হয়ে এই সড়ক দিয়ে চলাচল করে। পার্শ্ববর্তী বেতাগী, বামনা, পাথরঘাটা, বরগুনা সদর উপজেলা ও খুলনা অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন এ পথে যাতায়াত করেন।
জানা যায়, সড়ক বিভাগ কিছু জায়গায় ইটের খোয়া বিছিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছে। এতে ছোট যানবাহন (রিকশা, মোটরসাইকেল) চলাচলে ভোগান্তি আরও বেড়েছে। মির্জাগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা আলমগীর সিকদার বলেন, এই সড়ক বেহাল অনেক দিন ধরেই। বর্ষা মৌসুমে একেবারে চলার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ৫ মিনিটের পথ যেতে ৩০ মিনিটের বেশি লেগে যায়। এ ভোগান্তি আর কত বছর চলবে, কে জানে?
রিকশাচালক হাতেম আলী বলেন, উপায় নাই তাই এ সড়কেই রিকশা চালাই। প্রতিদিনই গাড়ি টুকিটাকি মেরামত করতে হয়। মাঝেমধ্যে রিকশা কাত হয়ে পড়ে। ফলে যাত্রী উঠতে চায় না। আগে দিনে ৫০০-৬০০ টাকা আয় হতো, এখন রিকশার জমাও ওঠে না।
স্থানীয় বাসিন্দা রফিক গোলদার বলেন, এ সড়কে মানুষের ভোগান্তি নিত্যদিনের সঙ্গী। বর্ষায় কাদা-পানিতে একাকার হয়ে যায়। শুষ্ক মৌসুমে পরিণত হয় ধুলার রাজ্যে। বর্ষার সময় সাধারণ মানুষসহ শিশুদের স্কুলে যেতে ভোগান্তি চরমে পৌঁছে। শুকনো মৌসুমে ধুলাবালিতে এলাকা সয়লাব থাকে। তখন রাস্তার আশপাশের বাসিন্দারা নানান রোগে আক্রান্ত হন।
পটুয়াখালী সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগের প্রকৌশলী জামিল আক্তার লিমন বলেন, গত ২-৩ বছরে এ সড়কে উল্লেখযোগ্য কোনো সংস্কার হয়নি। পটুয়াখালী চৌরাস্তা থেকে মির্জাগঞ্জের সুবিদখালী পর্যন্ত ৯ কি.মি সড়ক সংস্কারের জন্য ১৭ কোটি ৬০ লাখ টাকার দরপত্র অনুমোদনের পর কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। বর্ষা শেষে পুরোদমে কাজ শুরু হবে।