রাজবাড়ী পৌরসভার বিভিন্ন সড়ক, মোড় ও আবাসিক এলাকায় পড়ে আছে ময়লা-আবর্জনা। দীর্ঘদিন ধরে এসব সঠিকভাবে অপসারণ না করায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে পৌরবাসী। নির্দিষ্ট ডাস্টবিনে অথবা খোলা জায়গায় জমে থাকা আবর্জনা সময়মতো না সরানোয় দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ।
পৌরসভার বিভিন্ন মহল্লা ঘুরে দেখা যায়, ডাস্টবিন উপচে পড়া ময়লা স্তূপ হয়ে আছে রাস্তায়। এতে পথচারীদের চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। আবর্জনা থেকে ছড়াচ্ছে নানান রোগজীবাণু। বৃষ্টি হলে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ভেসে যাচ্ছে। দিনের পর দিন ময়লা-আবর্জনা অপসারণ না করায় ভোগান্তির শেষ নেই শহরবাসীর। একাধিকবার পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দিয়েও মিলছে না সমাধান। অতিষ্ঠ হয়ে স্থানীয়রা সম্প্রতি ভেঙে ফেলেছে শহরের বিভিন্ন জায়গায় রাখা একাধিক ডাস্টবিন। রাজবাড়ী পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালে তৃতীয় নগর পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নতিকরণ (ইউজিআইআইপি-৩) প্রকল্প থেকে পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে ১৭টি ডাস্টবিন স্থাপন করা হয়। গত শুক্রবার সরেজমিনে দেখা যায়, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সজ্জনকান্দার দুটি ডাস্টবিন ভাঙা। এ ছাড়া বিনোদপুরের একটি, বাঁশহাটার একটি ডাস্টবিনও ভেঙে ফেলা হয়েছে। পৌর এলাকার বাসিন্দারা জানান, বিভিন্ন স্থানে আবর্জনার স্তূপ। এগুলো পরিষ্কার না করায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। দুর্গন্ধে পরিবেশ অসহনীয় হয়ে ওঠে। বৃষ্টির সময় ময়লাপানিতে ভাসে। জমানো ময়লা থেকে মশামাছি ও অন্যান্য পোকামাকড় আক্রমণ করে। বাড়ছে রোগব্যাধি। শহরের বাজার পাঠশালা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, স্কুলের প্রবেশপথের কাছেই আবর্জনার স্তূপ। সেখানে একটি ডাস্টবিন আছে, কিন্তু ময়লা পরিষ্কার করা হয় না। ডাস্টবিনের পাশে বিভিন্ন মানুষ প্রস্রাব করায় আরও বেশি দুর্গন্ধ হয়। বিদ্যালয়ে থাকতে অনেক কষ্ট হয় শিক্ষকও ছাত্রছাত্রীদের। বাজার পাঠশালা এলাকার বাসিন্দা সোনালী আক্তার বলেন, ‘এখানে বসতবাড়ি, বিদ্যালয়সহ বেশ কিছু দোকান রয়েছে। ছোট একটি বক্স ডাস্টবিনে মানুষ ময়লা-আবর্জনা ফেলে। দুই মাস পর আবর্জনা পরিষ্কার করে পৌর কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ময়লা আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে বাজে অবস্থা হয়। ছড়ায় উৎকট গন্ধ। অনেকবার পৌরসভায় অভিযোগ করেছি। তারা কোনো কথা শোনে না। দুর্গন্ধে আমাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।’
জেলা নাগরিক কমিটির সভাপতি জ্যোতি শঙ্কর ঝন্টু বলেন, ‘শহরের ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কারে ব্যর্থ হয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ। বিভিন্ন স্থানের ময়লা থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে, পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। তবে ডাস্টবিনগুলো ভেঙে ফেলা ঠিক হয়নি।’ এ ব্যাপারে পৌর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।