৫৮ দিনের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার এক মাসের বেশি সময় পার হলেও এখনো কোনো প্রণোদনার চাল পায়নি কক্সবাজার জেলার নিবন্ধিত ৬৩ হাজার জেলে। এ ছাড়া হিসাবের বাইরে রয়ে গেছেন আরও ৬৫ হাজার জেলে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সুজয় পাল জানান, সরকারি বরাদ্দের চাল পৌঁছাতে কিছুটা দেরি হচ্ছে। ৮ মে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় বরাদ্দ দিয়ে পরিপত্র প্রকাশ করেছে। বরাদ্দের চাল হাতে পাওয়া মাত্র জেলেদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। কয়েক বছর ধরে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও এ বছর ৫৮ দিন মাছ ধরা বন্ধ। ২১ মের মধ্যে জেলেদের মাঝে চাল পৌঁছে দিতে বরাদ্দপত্রে নির্দেশনা দেয় মন্ত্রণালয়। আশা করি, আমরা জেলেদের পরিবারে চাল পৌঁছে দিতে সক্ষম হব।
জেলা মৎস্য বিভাগের তথ্যমতে, এবারের ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞায় (১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত) জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত ৬৩ হাজার ১৯৩ জেলেকে দুই ধাপে ৮৬ কেজি করে চাল বিতরণের কথা। প্রথম ধাপে ৫৬ কেজি ও দ্বিতীয় ধাপে ৩০ কেজি।
কক্সবাজার ফিশিংবোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, জেলার ছোট-বড় ছয় হাজার ট্রলারে জেলে শ্রমিক রয়েছেন ১ লাখ ২৮ হাজারের মতো। নিষেধাজ্ঞার এক মাসের বেশি সময় পার হলেও জেলেরা এখনো প্রণোদনার পাননি। এদিকে সাগরে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় ও প্রণোদনার চাল না পেয়ে জেলার নিবন্ধিত জেলেরা অর্ধাহারে অনাহারে দিনাতিপাত করছেন।
জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার জেলায় ৬৩ হাজার ১৯৩ জেলের জন্য ৩৫৩৮ টন চাল বরাদ্দ পাওয়া যাবে। সদর উপজেলার ৯৬২০ জেলে পাবেন ৫৩৮ টন চাল। চকরিয়ার ৫ হাজার ৮৫৭ জেলের জন্য ৩২৭ টন, মহেশখালীর ১৪ হাজার ৮৪২ জেলে পাবেন ৮০৮ টন, উখিয়ার ৩৮৯২ জেলে পাবেন ২১৭ টন, পেকুয়ার ৪৯৬৭ জেলে পাবেন ২৭৮ টন, কুতুবদিয়ার ১০,৯৫৯ জেলে পাবেন ৬১৩ টন, টেকনাফের ১০,৬৮৩ জেলে পাবেন ৫৯৮ টন ও রামুর ২,৭৭৩ জেলে পাবেন ১৫৫ টন চাল।
টেকনাফ ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল কালাম বলেন, আরাকান আর্মির তৎপরতার কারণে জেলেরা ঠিকমতো মাছ ধরতে পারেননি। এরপর এলো নিষেধাজ্ঞা। সরকারি বরাদ্দের চালও ঠিকমতো না পাওয়ায় বহু পরিবার অনাহারে-অর্ধাহারে জীবন কাটাচ্ছেন। জেলেদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে।
কুতুবদিয়া মেরিন ফিশারিজ কর্মকর্তা নাজমুস সাকিব জানান, নিষেধাজ্ঞার সময়ে দুই কিস্তিতে সরকার নিবন্ধিত জেলেদের মাঝে চাল বিতরণ করা হয়। এবার এখনো বরাদ্দ আসেনি এবং নতুন করে জেলেদের নিবন্ধনও করা হচ্ছে না।