বর্ষা মৌসুমে বিলে থই থই করে পানি। তখন পাড়ি দিতে হয় নৌকায়। এরপর হেঁটে কাদাপানি মাড়িয়ে চলাচল কিছুদিন। আর খরা মৌসুমে বিলের মাঝখানে জেগে ওঠে ভাঙাচুরা রাস্তা। এভাবেই দুর্ভোগ সঙ্গে নিয়ে বছরের পর বছর ধরে চলাচল করছেন নওগাঁর মান্দা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের অন্তত ১৫ গ্রামের মানুষ। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পেরিয়ে গেলেও কাক্সিক্ষত উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি প্রত্যন্ত এ জনপদে। স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, শংকরপুর বিলের মাঝখানে সেতু নির্মাণে শুরুতে মনে হয়েছিল আর দুর্ভোগ থাকবে না। অথচ রাস্তা না থাকায় কোনো কাজেই আসছে না এটি।
সম্প্রতি সরেজমিনে শংকরপুর গ্রামের বিলে গিয়ে দেখা যায়, বিলের ভিতর দিয়ে আধাভাঙা রাস্তায় কেউ হেঁটে, কেউ বাইসাইকেল, কেউবা মোটরসাইকেল নিয়ে চলাচল করছেন। অনেকে যাতায়াত করছেন চার্জারভ্যানে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের অন্তত ৫ থেকে ৬ হাজার মানুষ প্রতিদিন চলাচল করেন এই রাস্তা দিয়ে। দুর্ভোগ সঙ্গী করে যেতে হয় উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় চৌবাড়িয়া হাটে। এ ছাড়া নওগাঁর নিয়ামতপুর ও রাজশাহীর তানোর উপজেলার সঙ্গে স্বল্প সময় ও সহজে এ জনপদের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে বিলের ভিতরের এই রাস্তা। তবে তাদের অভিযোগ, বিলের ভিতর দিয়ে টেকসই রাস্তার পাশাপাশি একটি সেতু নির্মাণের প্রয়োজন। কিন্তু এলজিইডি রাস্তা ছাড়াই খামখেয়ালি করে বিলের মাঝখানে সেতুটি নির্মাণ করে। রাস্তা না থাকায় জনগনের কোনো কাজেই আসছে না প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি।
উপজেলা এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, ২৪ মিটার দৈর্ঘ্যরে সেতুটি নির্মাণ করতে ব্যয় হয়েছে ৩ কোটি ৩৪ লাখ ৫২ হাজার ৭৪৬ টাকা। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু করে ইথেন এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কয়েক দফা দর বাড়িয়ে কাজটি শেষ করা হয়েছে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে। এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সায়েদ বলেন, সেতুটির নির্মাণ শেষ হলেও পুরো কাজ এখনো শেষ হয়নি। সেতুর সংযোগ রাস্তা নির্মাণের জন্য মাটি সংগ্রহের কাজ চলছে। মাটি পেলেই রাস্তাটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হবে। এতে সবার দুর্ভোগ লাঘব হবে।