যশোর জেনারেল হাসপাতালে এইচআইভি আক্রান্ত এক অন্তঃসত্ত্বার সিজারিয়ান অপারেশন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তিনি একটি ছেলেসন্তান জন্ম দিয়েছেন। অপারেশনের পর মা ও শিশু দুজনই দৃশ্যত সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক চিকিৎসক হোসাইন সাফায়েত বলেন, নানান ধরনের ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও মানবিক দিক বিবেচনায় তারা ওই অন্তঃসত্ত্বার অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন। গতকাল সকাল ১০টায় রোগীকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। সাত সদস্যের মেডিকেল টিম সফলতার সঙ্গে পুরো কার্যক্রম সম্পন্ন করেন। তিনি আরও বলেন, দৃশ্যত মা ও শিশুকে সুস্থ দেখালেও আগামী কয়েক দিন বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে।
তখন বোঝা যাবে শিশুটিও এইচআইভি আক্রান্ত কি না।
তত্ত্বাবধায়ক হোসাইন সাফায়েত বলেন, হাসপাতালের চারটি অপারেশন থিয়েটার (ওটি) কক্ষের একটি এইচআইভি আক্রান্ত ওই অন্তঃসত্ত্বার অস্ত্রোপচারের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়। আগামী তিন দিন এই ওটি অব্যবহৃত থাকবে এবং বিশেষভাবে জীবাণুমুক্ত করা হবে। গাইনিসহ জরুরি অস্ত্রোপচার অপর তিনটি ওটিতে করা হবে। যশোর জেনারেল হাসপাতালের গাইনি বিভাগের চিকিৎসকরা জানান, মাসতিনেক আগে পরীক্ষা-নিরীক্ষার সময় ওই নারীর দেহে এইচআইভি ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। তখন ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন তিনি। তবে তিনি কীভাবে এইচআইভি সংক্রমণের শিকার হয়েছেন সে ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত হতে পারেননি চিকিৎসকরা।
ওই নারীর অস্ত্রোপচার করার সময় আসলে হাসপাতালের চিকিৎসকরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েন। অনেকেই বলেন, এইচআইভিতে আক্রান্ত প্রসূতিকে বিশেষায়িত হাসপাতালে রেখে উন্নত সেবা দেওয়া উচিত। ঢাকায় এ ধরনের বিশেষায়িত হাসপাতাল আছে। তবে যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) বজলুর রশিদ টুলু বলেন, বিশেষায়িত হাসপাতালে অস্ত্রোপচারটি করতে পারলে ভালো হতো। কিন্তু প্রসূতি আর্থিকভাবে দরিদ্র। সে কারণে মানবিক দিক বিবেচনায় যশোরেই অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তা ছাড়া বছরখানেক আগে এখানে এ ধরনের আরও একটি অস্ত্রোপচার হয়েছিল।