রংপুরের মিঠাপুকুরের পায়রাবন্দে নারী জাগরণের অগ্রদূত রোকেয়ার জন্মভিটা সংলগ্ন বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্রের পুকুরপাড়ে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে বিরল প্রজাতির অলংকারিক উদ্ভিদ তানপুরার চারা রোপণ করা হয়েছে।
এ উপলক্ষে বুধবার দুপুরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পায়রাবন্দ সরকারি বেগম রোকেয়া স্মৃতি ডিগ্রি মহাবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আবুয়াল বাকের।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, নান্দনিক এই উদ্ভিদটির পাতা দেখতেও বেশ নজরকাড়া। দু-এক বছর পর গাছে যখন ফল আসবে ধারণা করি এটি পরিণত হতে পারে বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্রের সবচেয়ে আকর্ষণীয় উদ্ভিদে। উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির সহগ্রন্থাগারিক আবেদা সুলতানাসহ এলাকার বেশ কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং কর্মীবৃন্দ।
বাংলা একাডেমির সহপরিচালক এবং বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবিদ করিম মুন্না জানান, অলংকারিক এই উদ্ভিদটির অনেকগুলো নাম-ডুগডুগি, মহাবেল, বোম্বাই বেল, দুরাইয়া লাউ! বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ-এর ফসল উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক মো. মোস্তাাফিজুর রহমান ২৭ বছর আগে ময়মনসিংহের গৌরীপুরের জমিদার বাড়িতে গিয়ে এমন বিচিত্র আকৃতির ফল দেখে বিস্মিত হয়েছিলেন। তখনও নামধাম কিছুই জানতেন না। গাছের একটি ডাল নিয়ে এসে বাকৃবি বোটানিকাল গার্ডেনের প্রবেশপথের বাদিকে রোপণ করেন। এমনটাই জানান ওই বিভাগের অধ্যাপক ড. ছোলায়মান আলী ফকির। সেই থেকেই এই গাছের বংশবৃদ্ধি।
জানা গেছে, মাঝারি আকৃতির বৃক্ষ হলেও কখনও মানুষের উচ্চতাকে ছাড়িয়ে যায় না। সারা বছরই তানপুরা গাছে পাতা থাকে। গাছটি কেটে দিলে ছাতাকৃতি দেখায়। সাধারণত বাড়ির গেটের সামনে বা পেছনে লাগানো হয়। ২-৩ বছরের মধ্যেই গাছে ফল আসে। লেয়ারিং এর মাধ্যমে বংশবৃদ্ধি হলেও ডাল কেটে লাগালে হয়ে যায় চমৎকার। কিউরিং করে শুকিয়ে তানপুরা ফল থেকে ভ্যানিটি ব্যাগ তৈরি করা যায়। হ্যান্ডি ক্রাফট শিল্পে গাছটি বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে। তানপুরা নামটি ড. ছোলায়মান ফকিরের দেয়া।
রংপুর মহানগরীতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়েও গাছটি দেখতে পাওয়া যায়। আর চারা কিনতে পাওয়া যায় এই মহানগরের অনেক নার্সারিতে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই