নারায়ণগঞ্জ আদালতের বিচারকের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ভুয়া আদেশনামা ও পরোয়ানা ফেরত তৈরির অভিযোগ উঠেছে এক আইনজীবীর সহকারীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় সোমবার দুপুরে সিয়াম আহমেদ নামে এক আইনজীবীর সহকারীকে আটক করা হয়েছে। তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট ধীরেন সরকারের সহকারী ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানার দায়ের করা হত্যাচেষ্টার একটি মামলায় মো. রুবেল ভূইয়া নামে একজনের বিরুদ্ধে আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। পরে রুবেল ভূইয়া আইনজীবীর সহকারী সিয়াম আহমেদের কাছে গেলে তিনি নিজেই বিচারকের স্বাক্ষর জাল করে একটি আদেশনামা ও পরোয়ান ফেরত কাগজ তৈরি করে রুবেল ভূঁইয়াকে দেন।
এদিকে ওই মামলায় রবিবার রাতে রুবেলকে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ গ্রেফতার করলে তার স্বজনরা আদালতের ভুয়া আদেশনামা ও পরোয়ানা ফেরতের কাগজ দেখান। বিষয়টি রূপগঞ্জ থানার ওসির সন্দেহ হলে তিনি সেটি অনুসন্ধানের জন্য নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শককে পাঠান। কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক অনুসন্ধান করে আদালতের আদেশ ও পরোয়ানা ফেরতের কাগজটি ভুয়া বলে জানালে বিষয়টি প্রকাশ পায়।
এ বিষয়ে কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. কাইউম খান বলেন, কয়েক মাস আগে থেকেই আমাদের কাছে কয়েকজন আইনজীবী অভিযোগ করছিলেন আদালত থেকে বিভিন্ন বিচারকদের স্বাক্ষর জাল করে বিভিন্ন আদেশনামা এবং পরোয়ানা ফেরত তৈরি করে প্রতারণা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে রবিবার রাতে রূপগঞ্জ থানায় পরোয়ানা ফেরত গেলে সেটা আমাদের কাছে পাঠানো হয় এবং আমাদের কাছে এটি সন্দেহ হয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা এ বিষয়ে অনুসন্ধান করে জানতে পারি অ্যাডভোকেট ধীরেন সরকারের সহকারী সিয়াম আহমেদ এই কাজটি করেছেন। সেই সাথে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে। আমরা তাকে পর্যবেক্ষণে রেখেছি। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সহকারী সিয়াম আহমেদ সম্পর্কে অ্যাডভোকেট ধীরেন সরকার বলেন, সিয়াম আহমেদ আমার সহকারী ছিল। তবে তার এই জালিয়াতির বিষয় আমার জানা ছিল না। তাকে আমি আর সহকারী হিসেবে নিবো না। আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সহকারী সমিতির সভাপতি হামিদুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় আমরা ওই সহকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। ইতিমধ্যে তার পরিচয়পত্র বাতিল করা হয়েছে। এখন আইন তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সরকার হুমায়ুন বলেন, সিয়াম আহমেদ নামে এক সহকারীর বিরুদ্ধে আমরা স্বাক্ষর জালিয়াতির কথা শুনেছি। আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো। সেই সাথে সিয়াম যে আইনজীবীর সহকারী ছিল তাকে ডেকে এনে আমরা সতর্ক করেছি। আমরা ওই সহকারীকে আইনের হাতে সোপর্দ করেছি।
বিডি প্রতিদিন/এমআই