হাতে ফুলের তোড়া নিয়ে ধানমন্ডির মাহবুব ভবনের গেটে অপেক্ষার প্রহর গুনছিল একঝাঁক শিশু। মঙ্গলবার (৬ মে) রাত প্রায় দশটার দিকে যখন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সহধর্মিণী ডা. জোবাইদা রহমানের গাড়িটি ভবনের সামনে এসে থামল, তখন ‘সুরভী’র শিশুরা বাঁধভাঙা উল্লাসে ফেটে পড়ল।
স্বাগতম, আপা!—চারপাশের এই সম্মিলিত স্লোগান যেন দীর্ঘ সতেরো বছরের অপেক্ষার নীরবতাকে ভেঙে দিয়ে স্পন্দিত হয়ে উঠল।
‘সুরভী’র বর্তমান প্রজন্মের শিশুরা তাকে প্রাণঢালা অভ্যর্থনা জানায়। তাদের নিষ্পাপ মুখের হাসি আর ভালোবাসার উষ্ণতায় জোবাইদা রহমান যেন ফিরে পান তার ফেলে আসা শিকড়ের স্পর্শ। দীর্ঘ প্রবাস জীবনের পর এই আন্তরিক অভ্যর্থনা নিঃসন্দেহে তার হৃদয়ে এক গভীর ছাপ ফেলেছে।
২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর স্বামী তারেক রহমানের সাথে ঢাকা ছেড়েছিলেন। দীর্ঘদিন পর নিজ দেশের মাটিতে পা রাখেন জোবাইদা রহমান। মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে শাশুড়ি বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন তিনি।
বিমানবন্দর থেকে সরাসরি দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বাসভবনে পৌঁছান জোবাইদা রহমান। এরপর তার প্রথম গন্তব্য ছিল পান্থপথের স্কয়ার হাসপাতাল।
মায়ের সাথে সাক্ষাতের পর ডা. জোবাইদা রহমানের পরবর্তী গন্তব্য ছিল ধানমন্ডির মাহবুব ভবন। এই বাড়িতে রয়েছে তার অসংখ্য স্মৃতি। রাতে যখন তিনি তার বাবা রিয়ার অ্যাডমিরাল মাহবুব আলী খানের স্মৃতিধন্য এই ভবনে পৌঁছান, তখন এক উষ্ণ অভ্যর্থনা অপেক্ষা করছিল তাঁর জন্য। ভবনের গেটে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে ছিল তার মায়ের হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান ‘সুরভী’র শিশুরা।
সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু ১৯৭৯ সালে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে শিক্ষার আলো পৌঁছে দেওয়ার মহান উদ্দেশ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ‘সুরভী’। বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত ৪৬ বছরে এই প্রতিষ্ঠানের হাত ধরে প্রায় আটাশ লাখ শিশু সাক্ষরতার সুযোগ পেয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল