জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের খসড়া নির্বাচন আচরণ বিধিমালা প্রকাশিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে এ বিধিমালা প্রকাশ করেন নির্বাচন কমিশন।
পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচব কমিশনারের স্বাক্ষরিত নির্বাচন আচরণ বিধিমালা দেখা যায়, জকসুর প্রকাশিত খসড়া আচরণ বিধিমালায় সর্বমোট ২৬টি বিষয়ে উল্লেখ করেছে নির্বাচন কমিশনার। আচরণ বিধিমালা সমূহ নিচে উল্লেখ করা হল—
০১. শিরোনাম:
ক. এই বিধিমালা 'জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন আচরণ বিধিমালা ২০২৫' নামে পরিচিত হবে; খ. এটি চূড়ান্ত আচরণ বিধিমালা প্রকাশের সময় হতে কার্যকর হবে। গ. চ্যান্সেলর কর্তৃক অনুমোদিত "জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়-এর কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ ও হল শিক্ষার্থী সংসদসমূহের গঠন ও পরিচালনা বিধিমালা ২০২৫" এর সাথে এই নির্বাচন আচরণ বিধিমালার কোনো বিধান সাংঘর্ষিক বা অসংগতিপূর্ণ হলে চ্যান্সেলর কর্তৃক অনুমোদিত বিধিমালা প্রাধান্য পাবে।
০২. সংজ্ঞা
ক. 'কমিশন' অর্থ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচন কমিশন ২০২৫; খ. 'দেওয়াল' অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অফিস, বিভাগ, অনুষদ, আবাসিক ভবন ও আবাসিক হল-এর বাহির ও ভিতরের দেওয়াল বা বেড়া অথবা তার সীমানা নির্ধারণকারী দেওয়াল বা বেড়া এবং বৃক্ষ, বিদ্যুতের লাইনের খুঁটি, খাম্বা, কালভার্ট এর অন্তর্ভুক্ত হবে; গ. 'নির্বাচন' অর্থ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন ২০২৫; ঘ. 'নির্বাচনপূর্ব সময়' অর্থ নির্বাচনের ক্ষেত্রে কমিশন কর্তৃক নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার দিন হতে নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের তারিখ ও সময় পর্যন্ত; ঙ. 'পোস্টার' অর্থ কাগজ, রেক্সিন, ডিজিটাল ব্যানার বা ইলেকট্রনিক মাধ্যমসহ অন্য যে কোনো মাধ্যমে প্রস্তুতকৃত কোনো প্রচারপত্র, প্রচারচিত্র, বিজ্ঞাপনপত্র, বিজ্ঞাপনচিত্র এবং যে কোনো ধরনের ব্যানার, চিকা বা বিলবোর্ড এবং যেকোনো দেয়াল লিখনও এর অন্তর্ভুক্ত হবে; চ. 'প্রার্থী' অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থী যার বিশ্ববিদ্যালয় ও হলের যাবতীয় পাওনা পরিশোধ করা আছে এবং যিনি তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন নাই অথবা যার প্রার্থীতা বাতিল হয় নাই; ছ. 'বহিরাগত' অর্থ মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়নাই এমন পরিচয়পত্রধারী শিক্ষার্থী ব্যতীত অন্য সকলেই বহিরাগত বলে পরিগণিত হবেন; জ. 'যথাযথ কর্তৃপক্ষ' অর্থ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক দায়িত্বপ্রাপ্ত বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত শিক্ষক, কর্মকর্তা বা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বডি/অঙ্গ; বা 'যানবাহন' অর্থ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত যানবাহন।
০৩. প্রার্থীর ডোপ টেস্ট ও প্রার্থীতা বাতিল
কমিশন প্রত্যেক প্রার্থীর ডোপ টেস্টের মাধ্যমে মাদকাসক্তির বিষয়টি পরীক্ষা করবেন এবং মাদকাসক্ত প্রমাণিত হলে উক্ত প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল বলে গণ্য হবে। কেউ ডোপটেস্টে অনুপস্থিত থাকলে তার মনোনয়নপত্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল বলে গণ্য হবে।
০৪. ফৌজদারী অপরাধে শাস্তিপ্রাপ্ত হলে ভোটাধিকার ও প্রার্থীতা বাতিল
কোনো শিক্ষার্থী কর্তৃক ফৌজদারী, আর্থিক, শিক্ষার্থী শৃঙ্খলাপরিপন্থী ও যৌন অপরাধ সংঘটিত এবং/ অথবা এ জাতীয় অপরাধে শান্তিপ্রাপ্ত (Convicted) হলে তিনি ভোটাধিকার হারাবেন এবং নির্বাচনে প্রার্থিতার অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। এছাড়াও নিম্নলিখিত বিষয়গুলো তার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে: ক. কোনো শিক্ষার্থী ফৌজদারী অপরাধে আদালত কর্তৃক শাস্তিপ্রাপ্ত হলে এবং/অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে যুক্ত থাকার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক শাস্তিপ্রাপ্ত হলে, শাস্তির মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। তবে, উক্ত শিক্ষার্থীর শাস্তি ভোগের মেয়াদ শেষ হলে এবং নিয়মিত শিক্ষার্থীর মর্যাদা ফিরে পেলে তিনি নির্বাচনে ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার অধিকার ফিরে পাবেন; খ. কোনো শিক্ষার্থী যৌননিপীড়ন সংক্রান্ত অপরাধে শাস্তিপ্রাপ্ত হলে তিনি নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
০৫. নির্বাচনী প্রচারণা:
ক. নির্বাচনী প্রচারণার ক্ষেত্রে একজন প্রার্থীকে তার বিভাগ, হল, শিক্ষাবর্ষ, উল্লেখযোগ্য কারিকুলাম ও কো-কারিকুলার কার্যক্রমের এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণের যৌক্তিকতার বিবরণীর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে হবে। নির্বাচনী প্রচারণার ক্ষেত্রে প্রত্যেক প্রার্থী বা তার পক্ষে বিধি ৬ হতে ২০ অনুসরণ করতে হবে। খ. ক্লাস বা পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে শ্রেণিকক্ষে বা পরীক্ষার হলরুমে কোনো নির্বাচনী প্রচারণা চালানো যাবে না।
০৬. নির্বাচনী সভা-সমাবেশ ও মিছিল সংক্রান্ত বিধি-নিষেধ
ক. ক্যাম্পাসে যেকোনো ধরনের সভা-সমাবেশ ও মিছিল নিষিদ্ধ থাকবে; খ. নির্বাচনী প্রচারণার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের অনুমতি ব্যতীত সর্বোচ্চ ২৫ (পঁচিশ) জনের অধিক একসাথে জমায়েত হওয়া যাবে না; গ. নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো বহিরাগত ব্যক্তি থাকতে পারবেন না; ঘ.বৈধ ভোটার ও প্রার্থী, বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী ব্যতীত অন্য যে কেউ বহিরাগত হিসেবে বিবেচিত হবেন; ঙ. বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো রকম অংশগ্রহণ বা প্রভাব বিস্তার করতে পারবেন না; চ. বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত উইকেন্ড/প্রফেশনাল প্রোগ্রামের শিক্ষার্থীগণ নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো ধরনের অংশগ্রহণ বা প্রভাব বিস্তার করতে পারবেন না।
০৭. পোস্টার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল ব্যবহার সংক্রান্ত বিধি-নিষেধ: ক. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় নির্বাচনী প্রচারণা কেবলমাত্র হ্যান্ডবিল/প্রচারপত্রের মাধ্যমে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে; খ. কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী তার নির্বাচনী প্রচারপত্রে তার নিজের ছবি ব্যতীত অন্য কোনো ব্যক্তির ছবি ব্যবহার করতে পারবেন না; গ. উপ-বিধি (খ) এ উল্লেখিত ছবি সর্বোচ্চ ৩" (তিন ইঞ্চি) ৫" (পাঁচ ইঞ্চি) সাইজের সাদা-কালো হাফ, সাধারণ ও সাম্প্রতিক ছবি হতে হবে। উল্লেখ্য, কোনো অনুষ্ঠান, মিছিলে নেতৃত্বদান, প্রার্থনারত অবস্থা ইত্যাদি ভঙ্গিমায় ছবি কোনো অবস্থাতেই ছাপানো যাবে না; ঘ. কোনোভাবেই নির্বাচনী প্রচারণায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা AI ব্যবহার করা যাবে না; ঙ, হ্যান্ডবিল কোথাও সাঁটানো যাবে না।
০৮. যানবাহন ব্যবহার সংক্রান্ত বিধি-নিষেধ:
ক. নির্বাচনী প্রচারণার সময় কোনো প্রকার যানবাহন ব্যবহার করা যাবে না; খ. মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় কোনো প্রকার মিছিল কিংবা শোডাউন করা যাবে না; গ. নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর সময় থেকে নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনে শান্তি-শৃঙ্খলা-বজায় রাখার সুবিধার্থে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত ব্যক্তি ব্যতীত অন্য কোনো ব্যক্তিকর্তৃক ভোটকেন্দ্রের নির্ধারিত চৌহদ্দির মধ্যে মোটর সাইকেল বা অন্য কোনো যান্ত্রিক যানবাহন ব্যবহার করা যাবে না।
০৯. ধর্মীয় স্থাপনা ব্যবহার সংক্রান্ত বিধি-নিষেধ
কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি কোনো ধর্মীয় উপাসনালয় নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যবহার করতে পারবেন না।
১০. দেয়াল লিখন সংক্রান্ত বিধি-নিষেধ
কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি- ক. দেয়াল লিখনের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারণা করতে পারবেন না; খ. কালি বা রং দ্বারা বা অন্য কোনোভাবে দেয়াল ছাড়াও কোনো দালান, ভবন, সড়ক, যানবাহন বা অন্য কোনো স্থাপনায় প্রচারণামূলক কোনো লিখন বা অংকন করতে পারবেন না। গ. পুরো ক্যাম্পাস সিসিটিভির আওতামুক্ত থাকবে এবং নির্বাচন কমিশন উহা পর্যবেক্ষণ করবেন।
১১. গেট বা তোরণ নির্মাণ, প্যান্ডেল বা ক্যাম্প স্থাপন ও আলোকসজ্জাকরণ সংক্রান্ত বিধি-নিষেধ
কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি- ক. নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো গেট বা তোরণ নির্মাণ করতে পারবেন না কিংবা চলাচলের পথে কোনো প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারবেন না; খ. কোনো ধরনের নির্বাচনী প্যান্ডেল তৈরি করতে পারবেন না; গ. নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে কোনো প্রকার আলোকসজ্জা করতে পারবেন না; ঘ. নির্বাচনী প্রচারণার জন্য প্রার্থীর ছবি বা প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণামূলক কোনো বক্তব্যসমেত পরিধেয় ব্যবহার করতে পারবেন নাঃ ঙ. ভোটারগণকে কোনোরকম পানীয় বা খাদ্য পরিবেশন বা কোনোরূপ উপঢৌকন প্রদান করতে পারবেন না।
১২. উস্কানিমূলক বক্তব্য বা বিবৃতি প্রদান, উচ্ছৃঙ্খল আচরণ বা বিস্ফোরক বহন সংক্রান্ত বিধি-নিষেধ:
ক. নির্বাচনী প্রচারণাকালে ব্যক্তিগত চরিত্র হরণমূলক বক্তব্য প্রদান বা কোনো ধরনের তিক্ত বা বিদ্বেষমূলক, উস্কানিমূলক বা মানহানিকর কিংবা লিঙ্গ, সাম্প্রদায়িকতা বা ধর্মানুভূতিতে আঘাত লাগে এমন কোনো বক্তব্য প্রদান করা যাবে না; খ. অনলাইনে, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় নির্বাচনী প্রচারণাকালে অন্য কোনো প্রার্থী বা তাহার পক্ষে কারো বিরুদ্ধে মানহানিকর/অপপ্রচার/অশোভন/উস্কানিমূলক কোনো বক্তব্য বা বিবৃতি প্রদান করা যাবে না; গ. নির্বাচনে কোনো শিক্ষার্থীর জানমালের কোনো ক্ষতিসাধন করা যাবে না; ঘ. নির্বাচন কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যতীত অন্য কোনো ব্যক্তি ক্যাম্পাসের মধ্যে অস্ত্র বা বিস্ফোরক দ্রব্য বা অন্য কোনো অস্ত্র বহন করতে পারবেন না; ঙ. কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে ভোটারদের প্রভাবিত করার উদ্দেশ্যে কোনো প্রকার বল প্রয়োগ বা অর্থ ব্যয় করতে পারবেন না।
১৩. প্রচারণার সময়:
ক. কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি ভোটগ্রহণের জন্য নির্ধারিত দিনের ২ (দুই) সপ্তাহ সময়ের পূর্বে কোনো প্রকার নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করতে পারবেন না। খ. নির্বাচনের ২৪ ঘন্টা আগে প্রচারণা শেষ করতে হবে। গ. দুপুর ১২:০০ টা থেকে রাত ৮:০০ টার মধ্যে প্রচারণা শেষ করতে হবে।
১৪. মাইক ব্যবহার সংক্রান্ত বিধি-নিষেধ:
কোনো প্রার্থী কিংবা তাহার পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি নির্বাচনী প্রচারণায় লাউডস্পীকার বা কোনোরূপ সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার করতে পারবেন না তবে নির্বাচন কমিশনের অনুমতি সাপেক্ষে হ্যান্ডমাইক ব্যবহার করা যাবে।
১৫. মনোয়নপত্র সংগ্রহ, দাখিল ও প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময়কালীন বিধি-নিষেধ:
ক. প্রার্থী নিজে অথবা তার মনোনীত প্রতিনিধির মাধ্যমে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন; খ. কোনো শিক্ষার্থী একসাথে কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ বা হল শিক্ষার্থী সংসদের একাধিক পদে প্রার্থী হতে পারবেন না। গ. মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় প্রত্যেক প্রার্থীকে লিখিতভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সম্মতি প্রদান করতে হবে। ঘ. মনোনয়নপত্র সংগ্রহ এবং দাখিলের সময় কোনো প্রকার মিছিল বা শোভাযাত্রা করা যাবে না। প্রার্থী ০৫ (পাঁচ) জনের বেশী সমর্থক নিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবেন না; ঙ. কোনো প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে চাইলে, তাকে সশরীরে উপস্থিত হয়ে স্বহস্তে স্বাক্ষরিত আবেদনপত্র জমা দিয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে হবে; চ. রিটার্নিং অফিসারের নিকট মনোনয়নপত্র দাখিল এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় অন্য কোনো প্রার্থী বা ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা কোনো ছাত্র সংগঠনের কেউ কোনো প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারবেন না।
১৬. মনোনয়ন প্রক্রিয়া:
ক. নির্বাচনে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক প্রত্যেক প্রার্থীর একজন শিক্ষার্থী-সদস্য কর্তৃক প্রস্তাবিত হতে হবে এবং অপর একজন ভিন্ন শিক্ষার্থী-সদস্য কর্তৃক সমর্থিত হতে হবে। খ. একজন প্রস্তাবক ভিন্ন পদের একাধিক প্রার্থী নাম প্রস্তাব করতে পারবেন।
১৭. নির্বাচনী প্রার্থীর খরচ:
ক. কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হল সংসদ নির্বাচনের জন্য সর্বোচ্চ ৫০০০/- (পাঁচ হাজার) টাকা এবং কেন্দ্রীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য সর্বোচ্চ ১৫,০০০/-(পনেরো হাজার) টাকা ব্যয় করতে পারবেন; খ. নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্যে নির্ধারিত টাকার অতিরিক্ত আর্থিক লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেলে প্রার্থিতা বাতিল বলে গণ্য হবে।
১৮. ভোটকেন্দ্রে প্রবেশাধিকার:
ক. ভোটারগণ নিজ নিজ পরিচয়পত্র প্রদর্শন করে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করবেন; খ. নির্বাচনী কর্মকর্তা-কর্মচারী, প্রার্থী, পোলিং এজেন্ট (অবশ্যই ভোটার) এবং প্রধান রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক অনুমোদিত ব্যক্তি ব্যতীত অন্য কেউ ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না। ভোটকেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিগণ তাদের নির্ধারিত স্থানে অবস্থান করবেন। উল্লিখিত সকলকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে পূর্বেই পরিচয়পত্র সংগ্রহ করতে হবে; গ. প্রধান রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক ইস্যুকৃত পরিচয়পত্র দেখিয়ে রিটার্নিং অফিসারের অনুমতি সাপেক্ষে গণমাধ্যমকর্মীগণ ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন, তবে ভোটকেন্দ্রের বুথসমূহে প্রবেশ করতে পারবেন না। ভোটকেন্দ্রের অভ্যন্তরে কোনো ধরনের লাইভ সম্প্রচারসহ ভোটকার্য বাধাগ্রস্ত হতে পারে এমন কোনো কাজ করা যাবে না; ঘ. ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের পর মোবাইল ফোন ও ইলেকট্রনিক যোগাযোগের সকল মাধ্যম বন্ধ রাখতে হবে। বুথের অভ্যন্তরে কোনভাবেই এ ধরনের কোনো ডিভাইস ব্যবহার করা যাবে না বা কোনো প্রকার ছবি তোলা ও ভিডিও করা যাবে না। ঙ. ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের আগে প্রত্যেক ভোটারকে তার হাতের যেকোনো আঙ্গুলে কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত অমোচনীয় কালির ছাপ নিতে হবে। চ. কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যেসকল ভোটার ভোট কেন্দ্রের নির্ধারিত সীমানার মধ্যে থাকবেন তাদের ভোটদান সম্পন্ন না হওয়া পরযন্ত ভোট গ্রহণ চলবে।
১৯. ক্যাম্পাসে প্রবেশ:
নির্বাচনের দিন থেকে শুরু করে ফলাফল ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত ভোটার এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও কমিশন কর্তৃক অনুমতিপ্রাপ্ত ব্যক্তি ব্যতীত ক্যাম্পাসে অন্য সকলের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে।
২০. ভোটার স্লিপ প্রদান:
কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে অন্য কোনো ভোটার নির্বাচনের দিন ভোটার স্লিপ প্রদান করতে পারবেন। তবে শর্ত থাকে যে, ভোট কেন্দ্রের ৫০ মিটারের মধ্যে ভোটার স্লিপ বিতরণ করা যাবে না।
২১. নির্বাচন প্রভাবমুক্ত রাখা:
কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে অর্থ, অস্ত্র ও পেশী শক্তি বা অন্য কোনো ক্ষমতা দ্বারা নির্বাচন প্রভাবিত করা যাবে না।
২২. নির্বাচনপূর্ব ও নির্বাচনকালীণ অনিয়ম এবং কমিশন কর্তৃক প্রার্থিতা বাতিল:
ক. এই বিধিমালার যে কোনো বিধানের লঙ্ঘন 'নির্বাচনী অনিয়ম' হিসাবে বিবেচিত হবে এবং উক্ত অনিয়মের দ্বারা সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা প্রার্থী প্রতিকার স্বরূপ নির্বাচন কমিশন বরাবর আবেদন করতে পারবেন;খ. উপ-বিধি (ক) এর অধীনে প্রাপ্ত আবেদন কমিশনের বিবেচনায় বস্তুনিষ্ঠ হলে কমিশন সেটি তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্ট বা যে কোনো নির্বাচনী তদন্ত কমিটির কাছে সুপারিশ করতে পারবেন; গ. কোনো তথ্যের ভিত্তিতে বা অন্য কোনোভাবে কমিশনের নিকট কোনো নির্বাচনপূর্ব অনিয়ম দৃষ্টিগোচর হলে, কমিশন- ১. প্রয়োজনীয় তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্ট বা অন্য কোনো নির্বাচনী তদন্ত কমিটির কাছে প্রেরণ করতে পারবেন; ২. তাৎক্ষণিকভাবে প্রধান রিটার্নিং অফিসার বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দিতে পারবেন।
ঘ. উপ-বিধি (ক) বা (খ) বা (গ) এ উল্লেখিত ক্ষেত্রে নির্বাচনী তদন্ত কমিটি বিধি মোতাবেক তদন্তকার্য পরিচালনাপূর্বক কমিশনের বরাবরে সুপারিশ করবেন; ঙ. কমিশন তদন্ত প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে যে কোনো প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করবেন।
২৩. বিধিমালা লঙ্ঘন শাস্তিযোগ্য অপরাধ:
কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি এই বিধিমালার কোনো বিধান লঙ্ঘন করলে তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়া হবে। আত্মপক্ষ সমর্থনে তার জবাব সন্তোষজনক মনে না হলে নির্বাচন কমিশন তার প্রার্থিতা বাতিলের এখতিয়ার সংরক্ষণ করবেন এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সুপারিশ করবেন।
২৪. নির্বাচন বানচাল করা বা করার চেষ্টা শাস্তিযোগ্য অপরাধ:
কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি নির্বাচন বানচাল করা বা করার চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে 'জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তার এই কর্মকান্ড কারণে কমিশন প্রয়োজনে তার প্রার্থীতা বাতিলসহ অন্যান্য শাস্তির বিধান করতে পারবেন।
২৫. নির্বাচন বিষয়ে অভিযোগ ও নিষ্পত্তিকরণ:
নির্বাচন বিষয়ে যেকোনো আপিল "জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়-এর কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ ও হল শিক্ষার্থী সংসদসমূহের গঠন ও পরিচালনা বিধিমালা ২০২৫" এর দ্বিতীয় ভাগের ১৭ নং বিধি অনুযায়ী গঠিত কমিটি নিষ্পত্তিকরণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করিবেন।
২৬. নির্বাচন পর্যবেক্ষক:
নির্বাচন কমিশনের অনুমতি সাপেক্ষে কোনো ব্যক্তি বা সংস্থার নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করিতে পারিবেন। বাক্যগঠন ও বানান ঠিক করে দিন
বিডি-প্রতিদিন/মাইনুল