ঝাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনের মধ্য দিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করল ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ।
সোমবার দুপুরে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সভাকক্ষে দু’দিনব্যাপী এ নবীনবরণ অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানের প্রথম দিনে বিভাগের পরিচিতি বিষয়ক ভিজ্যুয়াল উপস্থাপনার মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু হয়।
ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তাহমিনা রিতার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মিরাজ হোসেন।
এ সময় অনুষ্ঠানের বিশেষ অংশে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে পোস্টার উপস্থাপন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হয়। প্রথম দিনের সমাপ্তি ঘটে বিভাগের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে।
মঙ্গলবার অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিনে ‘ফ্রম ক্লাসরুম স্টেপিং ইনটু প্রফেশনাল লাইফ’ শিরোনামে সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। এতে দেশের বিভিন্ন খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ক্যারিয়ার, বিদেশে উচ্চশিক্ষা এবং ম্যানেজমেন্ট স্ট্র্যাটেজি বিষয়ে আলোচনা করবেন।
নবীনবরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল করিম বলেন, চলতি শিক্ষাবর্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় সর্বপ্রথম শ্রেণিকক্ষে পাঠদান কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছে। গত শিক্ষাবর্ষের তুলনায় এবার পাঠদান কার্যক্রম চার মাস এগিয়ে শুরু হয়েছে, যা ভবিষ্যতে অনার্স ও মাস্টার্স প্রোগ্রামগুলো নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে কিছুটা হলেও সহায়ক হবে এবং শিক্ষার্থীরা ক্রমান্বয়ে সেশনজট থেকে মুক্তি পাবে।
উপাচার্য আরও বলেন, সবকিছুর ঊর্ধ্বে একাডেমিক জীবনের গুরুত্ব দিতে হবে। আমরা ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানের পথে এগিয়ে যাচ্ছি। আগামীর সুন্দর একাডেমিক পরিবেশে তোমরা মেধা চর্চা করে সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছাতে পারবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাবিনা শরমীন বলেন, তোমরা তোমাদের শিক্ষকের কাছ থেকে পরামর্শ এবং উপদেশ নিয়ে জীবনকে সাজাবে। তোমরা সমালোচনা করবে, সেটি যেন হয় যৌক্তিক সমালোচনা। শুধু ভর্তি হয়ে সাটিফিকেট নিলে হবে না, কথা-বার্তায় ও আচার-আচরণে সৌজন্যবোধ থাকতে হবে। ভাষার মাধুর্য দিয়ে তোমরা সমালোচনা করবে, সেটি যেন কেউ নেতিবাচক ভাবে না নেয়। জীবনে সততা থাকলে তুমি অবশ্যই জিতবে। দেশ ও জাতি তোমাদের কাছ থেকে অনেক প্রত্যাশা করে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মনিরুজ্জামান বলেন, জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমেই শিক্ষার্থীদের স্মার্টনেস বৃদ্ধি পায়। যত বেশি তথ্যভাণ্ডার সমৃদ্ধ হবে, তত বেশি স্মার্ট হবে তারা। এজন্য ভাষাগত দক্ষতা ও যোগাযোগ সক্ষমতা বাড়াতে হবে। কমিউনিকেশন ছাড়া আজ জব মার্কেটে কোনও মূল্য নেই। তোমাদের ব্যবহার দিয়ে অন্যদের থেকে আলাদা করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতা শব্দটিকে তুমি কীভাবে ব্যবহার করবে সেটা তোমার উপর নির্ভর করে। শুধু সিজিপিএ ভালো হলে হবে না, সাথে দক্ষতা এবং ভালো যোগাযোগ থাকতে হবে। শৃঙ্খলা এ ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থীদের সবার আগে। তোমরা একাডেমিক আড্ডা দেবে নতুন কিছু শেখার জন্য।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মোশাররাফ হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীদের সময়ানুবর্তিতা বজায় রেখে সঠিক একাডেমিক কার্যক্রমে মনোযোগ দিতে হবে। সেক্ষেত্রে সবাইকে নিয়মিত ক্লাস-পরীক্ষা এবং পড়াশোনা করতে হবে।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইছ উদদীন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম পথিকৃৎ এই অনুষদে ভর্তি হতে পেরে শিক্ষার্থীরা সত্যিই সৌভাগ্যবান। শিক্ষার্থীরা বিভাগের গুণী ও সিনিয়র শিক্ষকদের কাছ থেকে মূল্যবান অনুকরণীয় গুণাবলি অর্জন করতে পারবে।
ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য দেন ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মুহাম্মদ মঞ্জুর মুর্শেদ ভূঁইয়া, মেন্টরসের পরিচালক ও সিইও অনিন্দ্য চৌধুরীসহ বিভাগের অন্যান্য শিক্ষকেরা।
বিডি প্রতিদিন/একেএ