ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ভালো গবেষণার প্রস্তাবনা থাকলেও সেগুলোতে বরাদ্দ না দিয়ে আগামী ২ মে রিসার্চ এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড আয়োজন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুন আহমেদ। অভিযোগ উঠেছে, অনুষ্ঠানের নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ অপচয় হচ্ছে এবং ফ্যাসিবাদের পৃষ্ঠপোষকতা করা হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, অনুষ্ঠান উপলক্ষে প্রো-ভিসি মামুন আহমেদ ২৫০ জন অতিথিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। যেখানে পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টারও থাকার কথা রয়েছে।
জানা গেছে, আমন্ত্রিত ২৫০ জন অতিথির মধ্যে অনেকেই পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর। যারা জুলাইয়ের আন্দোলনের সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে অংশ নেয়। এমনকি শেখ হাসিনার পক্ষে বিবৃতি দিয়ে মানববন্ধন এবং গণভবনে বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি প্রো-ভিসি মামুন আহমেদ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করার জন্য একটি বড় অঙ্কের বাজেট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে উপস্থাপন করেন। এ ধরনের প্রস্তাবের ক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী কোষাধ্যক্ষের সুপারিশের প্রয়োজন হয়। কিন্তু প্রো-ভিসি তা না করে সরাসরি উপাচার্যের অনুমতি নেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে উপাচার্য প্রস্তাবটি কোষাধ্যক্ষের মতামতের জন্য পাঠান।
জানা যায়, কোষাধ্যক্ষ রিসার্চ এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড প্রদানের বিষয়ে দ্বিমত পোষণ না করলেও গবেষণা খাতে অর্থ সংকট থাকায় বিপুল অর্থ ব্যয়ে এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনে একমত হননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অনেকেই মনে করেন অনুষ্ঠানের নামে অর্থ ব্যয় না করে বরং সে অর্থ গবেষণার জন্য বরাদ্দ দেওয়া বাঞ্ছনীয়। এরপরও প্রো-ভিসি মামুন আহমেদ থেমে না থেকে বাজেট প্রস্তাবটি অনুমোদন করান।
প্রশাসনিক ভবন সূত্রে জানা গেছে, অনুষ্ঠানে শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা থাকার কথা থাকলেও অতিথিদের অনেকে ও অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্তরা শেখ হাসিনা সরকারের দোসর হিসেবে পরিচিত।
নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমিত অর্থের মধ্য থেকে উৎসবের নামে এই অর্থ ব্যয়কে শিক্ষার্থীরা ভালোভাবে দেখছেন না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, অ্যাওয়ার্ডের নামে দিনব্যাপী জমজমাট আয়োজন আর খাওয়া-দাওয়া নতুন বাংলাদেশে কোনোভাবেই কাম্য নয়। যেখানে আমাদের হলে থাকার সমস্যা, খাওয়ার সমস্যা, সেখানে ফ্যাসিবাদের দোসরদের নিয়ে এমন আয়োজন খুবই লজ্জাজনক। শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠানটি বাতিল করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান।
বিডি প্রতিদিন/এমআই