নানা আয়োজনে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ উদযাপন করলো বসুন্ধরা পাবলিক স্কুল। প্রতিষ্ঠার পর এবারই ছিল প্রতিষ্ঠানটির প্রথম বৈশাখ। শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে উৎসবটি এক আনন্দময় মিলনমেলায় পরিণত হয়।
সোমবার সকাল থেকে নানা আনন্দঘন আয়োজনের মধ্যদিয়ে দিনব্যাপী এই বৈশাখ উদযাপন শুরু হয়।
সকাল বেলায় স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে একটি বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি স্কুল প্রাঙ্গণ থেকে শুরু করে বসুন্ধরা কিংস এরিনার সামনের সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় স্কুলে ফিরে আসে।
শোভাযাত্রায় শিক্ষার্থীদের হাতে হাতে ছিল রঙিন প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন ও বৈশাখী নানা উপকরণ। ঐতিহ্যবাহী পোশাকে সজ্জিত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা শোভাযাত্রায় এক ভিন্ন মাত্রা যোগ করেন। ঢাক-ঢোলের বাদ্য আর বৈশাখী গান শোভাযাত্রাকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে।
শোভাযাত্রা শেষে স্কুল প্রাঙ্গণে বৈশাখী মেলার উদ্বোধন করা হয়। মেলায় শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন ধরনের ঐতিহ্যবাহী লোকজ খেলা ও বিনোদনের ব্যবস্থা ছিল। এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ছিল ঘোড়ার গাড়ি, বায়োস্কোপ দেখা ও নাগরদোলা। ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা এসব আয়োজনে আনন্দিত হয়ে ওঠে।
এছাড়াও মেলায় বিভিন্ন ধরনের খাবারের স্টল বসে, যেখানে বাঙালি সংস্কৃতির ঐতিহ্যবাহী খাবার পরিবেশন করা হয়।
শিক্ষার্থীদের অনুভূতি জানতে চাইলে কেজি শ্রেণীতে পড়া শিক্ষার্থী শাইরা রওনাফ বলে, আজ আমার অনেক ভালো লাগছে। ঘোড়ার গাড়িতে চড়েছি, নাগরদোলায় উঠেছি। বন্ধুদের সঙ্গে অনেক মজা করছি। বৈশাখী মেলায় এসে আমি খুব খুশি।
অভিভাবকদের মধ্যে একজন রোকাইয়া ইসলাম বলেন, স্কুলের এই উদ্যোগটি সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। আমার ছেলে-মেয়ে খুব খুশি হয়েছে। এমন আয়োজনের মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম আমাদের সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারবে এবং এর প্রতি আগ্রহী হবে।
দিনব্যাপী এই বৈশাখী উৎসবে গান, নাচ ও কবিতা আবৃত্তিরও আয়োজন করা হয়। স্কুলের শিক্ষার্থীরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে তাদের প্রতিভার পরিচয় দেয়। শিক্ষকরাও বিভিন্ন পরিবেশনায় অংশ নিয়ে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করেন।
প্রথম বৈশাখ পালন নিয়ে বসুন্ধরা পাবলিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আনিছুর রহমান বলেন, আমাদের শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের অংশগ্রহণের বৈশাখের সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হচ্ছে। একসঙ্গে আমাদের বসুন্ধরা যে স্পেশাল চাইল্ড স্কুল আছে সেখানকার শিক্ষার্থীরাও এখানে অংশগ্রহণ করছে। পাশাপাশি আমরা সকলে একটি র্যালি করেছি। যেখানে বাংলার সংস্কৃতি যে সকল বিষয় গুলো আছে তা নিয়ে আনন্দ র্যালি করেছি। র্যালির মাধ্যমে আমাদের আয়োজন শুরু হয়েছে, তারপরে আমরা মেলা উদ্বোধন করেছি।
প্রধান শিক্ষক বলেন, এই মেলার আয়োজন করার উদ্দেশ্য হচ্ছে শিক্ষার্থীরা যেন আমাদের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যকে বুঝতে পারে এবং নিজেরা উপভোগ করতে পারে। পাশাপাশি আমাদের বাংলার যে সংস্কৃতি, বাংলার যে গান, আগে আমরা যেগুলো গাইতাম, সেই বিষয়গুলোকে আমরা এখানে নিয়ে আসার চেষ্টা করেছি। বাচ্চাদের সঙ্গে আমরা সেই যুগ আর এই যুগের একটা বন্ধনের চেষ্টা করছি। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের অভিভাবক এবং আত্মীয়-স্বজনরাও আসছেন এবং মেলা উপভোগ করছেন যে কারণে এটা একটা পারিবারিক বন্ধনে পরিণত হয়েছে। এর মাধ্যমে সামাজিক একটা বন্ধন তৈরি করাও আমার একটা উদ্দেশ্য।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত