শখের বসে ইউটিউব দেখে বিদেশি পুষ্টিকর ফল মালবেরির চাষ করে চমকপ্রদ সাফল্য পেয়েছেন দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার বালিপুকুর গ্রামের তরুণ উদ্যোক্তা রোকনুজ্জামান। চাকরির পেছনে না ছুটে তিনি প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে এই ফলটির চাষ শুরু করেন এবং এরইমধ্যে বিক্রি করে আয় করেছেন লক্ষাধিক টাকা।
স্থানীয় কৃষি বিভাগের সহায়তায় তিনি মালবেরি ফল ও ফলের চারা উৎপাদন করছেন। দুই বছর আগে সিলেট থেকে একটি মালবেরি গাছের চারা সংগ্রহ করে নিজের লিচু বাগানে রোপণ করেন। পরের বছরই গাছে ফল আসতে শুরু করে। গত বছর তিনি ৩৬ হাজার টাকার ফল ও ২৮ হাজার টাকার চারা গাছ বিক্রি করেছেন বলে জানান।
রোকনুজ্জামান বলেন, “ফলটি দেখতে যেমন সুন্দর, খেতেও তেমন সুস্বাদু। প্রথমে সবুজ, পরে লাল ও সম্পূর্ণ পেকে গেলে কালো রঙ ধারণ করে। কাঁচা অবস্থায় টক, মাঝামাঝি অবস্থায় টক-মিষ্টি এবং পাকা অবস্থায় খুবই মিষ্টি।”
হাকিমপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরজেনা বেগম জানান, “রোকনুজ্জামান এ উপজেলায় প্রথমবারের মতো মালবেরির চাষ করেছেন। ফল আসতে শুরু করেছে, এবং বিক্রিও হচ্ছে। তিনি চারা উৎপাদনও করছেন। আগ্রহী কৃষকদের শুরুতে এক বা দুইটি গাছ দিয়ে চাষ শুরু করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।”
দিনাজপুর ডায়াবেটিক হাসপাতালের পুষ্টিবিদ নাইমা ফেরদৌস জানান, “মালবেরি ফল ভিটামিন সি, কেকে, ফাইবার ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। এটি আয়রনসমৃদ্ধ হওয়ায় রক্তস্বল্পতা দূর করে। কোষ্ঠকাঠিন্য, জ্বর, দাহ ও কফ দূরীকরণেও পাকা তুঁত ফল অত্যন্ত কার্যকর। তুঁত গাছের ছাল ও শিকড়ের রস কৃমিনাশক হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।”
কৃষি বিভাগ জানায়, তুঁত ফলের ইংরেজি নাম মালবেরি। এটির বিভিন্ন রঙ রয়েছে সাদা, লাল ও কালো। গ্রামাঞ্চলে তুঁত নামেই বেশি পরিচিত হলেও আন্তর্জাতিকভাবে এটি মালবেরি নামে পরিচিত। তুঁত গাছের পাতা রেশম উৎপাদনের গুটি পোকার প্রিয় খাদ্য হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।
বিডি প্রতিদিন/আশিক