নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা বিসিক এলাকার সজীব চৌধুরী শখের বশে বাসার ছাদে বাগান করেছিলেন। সেই সাথে বাগানের জন্য বেছে নিয়েছিলেন পছন্দের ফল আঙুরের চারা। বর্তমানে বাগানের প্রতিটি গাছেই ঝুলছে থোকায় থোকায় আঙুর। তবে বাণিজ্যিকভাবে আঙুরের ফলন না হলেও অনেক সময় বাসার চাহিদা মেটানো হচ্ছে এই বাগান থেকে।
ফতুল্লা বিসিক এলাকার শহীদুল ইসলামের চারতলা ভবনের ছাদে সজীব চৌধুরী এই বাগান গড়ে তুলেছেন। শহীদুল ইসলাম তার ভগ্নিপতি। সেই সুবাদে তার বাসার ছাদে বাগান করেছেন সজীব। বাগানে আঙুর ছাড়াও আনার, আম, আমলকি, পমেলো ও বারমাসি কাঁঠাল সহ দেশি-বিদেশি প্রায় ২০ থেকে ২৫ রকমের ফলের চারা রয়েছে।
আর এসব ফলের চারায় বাসার ছাদটি সবুজে ছেয়ে গেছে। আঙুর গাছগুলোর ডালে ডালে ঝুলছে আঙুরের থোকা। বাগানটি দৃষ্টিনন্দন হওয়ায় অনেক সময় আশপাশের লোকজনও দেখতে আসছেন। কেউ কেউ আবার বাগান তৈরি আগ্রহও প্রকাশ করছেন।
এ বিষয়ে সজীব চৌধুরী বলেন, মূলত শখের বসেই বাগান শুরু করেছিলাম। আমি কখনও লাভের আশ করিনি। আগে প্রবাসে ছিলাম। প্রবাসে থাকার সময় বাগান সংক্রান্ত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতাম। তখন থেকেই মনে মনে বাগান করার ইচ্ছা ছিল। যখন স্থায়ীভাবে দেশে আসার চিন্তা করি তখন বাগান করার সিদ্ধান্ত নিই। সেইসঙ্গে আমার পছন্দের ফল আঙুরকে বেছে নিই এবং আঙুরের বাগান করার সিদ্ধান্ত নেই।
সেই সাথে দেশের বাইরে থাকা কয়েকজন শুভাকাক্ষীর কাছ থেকে আঙুর গাছের চারা সংগ্রহ করেছি। নিউক্রেন, ইতালি, তুরস্ক ও জাপান থেকে বিভিন্নভাবে বিভিন্ন মাধ্যমে আঙুর গাছের চারা সংগ্রহ করে। আর এভাবে একটা দুইটা করে সংগ্রহ করতে করতে ১৬৩ জাতের আঙুর সংগ্রহ করেছি। আঙুরের ফলনের কমপক্ষে তিনবছর অপেক্ষা করতে হবে। তিন বছর অপেক্ষার পর ফলন পাওয়া যেতে পারে।
তিনি আরও বলেন, আমার কাছে যে পরিমাণ সংগ্রহ রয়েছে যেগুলো আমি এখন বিস্তার করার চেষ্টা করছি। সে লক্ষ্যে ফেসবুকে সাজ গার্ডেন নামে একটি গ্রুপ খোলা হয়েছে। আমাদের এই গ্রুপে অনেক বাগানি রয়েছেন। তারা অনেকেই আমাদের এখান থেকে বিনামূল্যে এসব জাত সংগ্রহ করছেন। বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এগুলো উপহার দিয়ে আসছি।
সাজ গার্ডেনের অ্যাডমিন মোসুমী জাহান নুপুর বলেন, ছাদবাগানে একটা মনোরম পরিবেশ রয়েছে। এখানে আসলেই যেন মনটা ভালো হয়ে যায়। মানুষের অনেক রকম স্বপ্ন থাকে। তেমনি আমাদের সজীব চৌধুরীর একটা স্বপ্ন হচ্ছে এই ছাদবাগান। তিনি আমাদেরকেও অনেক সময় ছাদবাগান সম্পর্কে বিভিন্ন উপদেশ দিয়ে থাকেন। নতুন বাগানিদের গাছ উপহার দিয়ে সহযোগিতা করে থাকেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, আঙুর আমাদের দেশে অনেক আগে থেকেই উৎপাদন হয়। তবে মিষ্টি না হয়ে টক হয়ে যায়। এখানে যে আঙুর চাষ করা হচ্ছে সেটা নাকি মিষ্টি। যদি এটা মিষ্টি হয় তাহলে খুবই ভালো।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল