পথের ধারে বিশালাকৃতির বিশেষ বৈশিষ্ট্যের এক প্রজাতির বাঁশের দিকে নজর পড়বে এ পথে যাতায়াতরত যে কোনো মানুষের। রংপুর মহানগরীর বিলুপ্ত লক্ষ্মী টকিজের পেছনে জেলা পরিষদের পাশ দিয়ে যে রাস্তাটি চলে গেছে ব্রিজের দিকে সেটি পেরিয়ে কিছুদূর এগোলে বামদিকে গোমস্তা পাড়া এলাকায় দেখা মিলে বিরল প্রজাতির এ বাঁশের। এ বিশেষ প্রজাতির বাঁশ সাধারণত রংপুরে দেখা যায় না।
কিন্তু বিরল প্রজাতির বাঁশ সংরক্ষণে নেই কোনো উদ্যোগ। কেউ এর খবর রাখে না। অনাদর-অবহেলায় বেড়ে উঠছে বাঁশ ঝাড়টি। জানা গেছে, বাঁশ বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল উদ্ভিদ। ঘাস পরিবারের এই উদ্ভিদটির প্রতি ২৪ ঘণ্টায় ৪৭ দশমিক ৬ ইঞ্চি অর্থাৎ প্রায় ৪ ফুট বৃদ্ধির রেকর্ড করা হয়েছে। অনুকূল পরিস্থিতিতে একটি নতুন বাঁশের অঙ্কুর এক বছরেরও কম সময়ে তার পূর্ণ উচ্চতায় পৌঁছে। অক্সিজেন নির্গত, কার্বন-ডাই অক্সাইড শোষণ, প্রাকৃতিক এয়ার কন্ডিশনার, খরা প্রতিরোধ, মাটির ক্ষয়রোধ ছাড়াও নানা উপকার সাধন করে বাঁশ। এটি চাষের জন্য কোনো সারের প্রয়োজন হয় না। দোলনা থেকে শুরু করে কবর পর্যন্ত বাঁশ কাজে লাগে। নির্মাণসামগ্রী, খাদ্য উৎস এবং কাঁচাপণ্য ছাড়াও প্রায়শই বাঁশের চিত্রকর্ম ও বাঁশের কাজ শিল্পকলায় চিত্রিত হয়। এর বহুমুখী ব্যবহার রয়েছে। পৃথিবীতে ৩০০ প্রজাতির বাঁশ রয়েছে। বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউট ৩৩ প্রজাতির বাঁশ সংরক্ষণ করেছে।
বাংলা একাডেমির সহপরিচালক এবং বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্র পায়রাবন্দ রংপুরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবিদ করিম মুন্না জানান, বুদুম বাঁশ কিংবা ভুদুম বাঁশ নামেও পরিচিতি আছে এই বাঁশটির। ইংরেজি নাম Giant Bamboo উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম Dendrocalamus giganteus Munro। এটা বনাঞ্চলের বাঁশ হলেও টিকে গেছে এখানকার পরিবেশের সঙ্গে। বাংলাদেশের কক্সবাজার, চট্টগ্রাম এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের বৌদ্ধমন্দিরে এই বাঁশ চাষ হয়ে থাকে। সংস্কৃতি কর্মী কামরুজ্জামান দিশারী বলেন, রংপুরের অঞ্চলে এই বাঁশ দুর্লভ। রাস্তার পাশে বেড়ে ওঠা এই বাঁশ সংরক্ষণ করে এর সংখ্যা বৃদ্ধি করা উচিত।