নাটোরের লালপুর দেশের উষ্ণতম স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম। এই তীব্র গরমের মধ্যে পরিবেশ সুরক্ষার লক্ষ্যে বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলের উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ ও বিতরণ কর্মসূচি পালন করেছে।
বুধবার (৪ জুন) সকাল ১০টায় লালপুরের ডেবরপাড়া-বুধিরামপুর বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুল চত্বরে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ফলদ, বনজ ও ঔষধি গাছের চারা গ্রামের বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ, কমিটির সদস্য ও স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও স্কুল চত্বরে একটি ফলদ গাছ রোপণ করা হয়। লালপুর থানা সদরের আশপাশের স্কুল, কলেজ, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার ধারে, কবরস্থান প্রভৃতি জায়গায় পর্যায়ক্রমিকভাবে বৃক্ষরোপণের পরিকল্পনা নেয়া হয়।
এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো লালপুরের পরিবেশকে আরও সবুজ ও সুন্দর করে তোলা এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৃক্ষরোপণের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো। ফারাক্কার অভিশাপ পুষ্ট পদ্মানদীর তীরে অবস্থিত লালপুর উপজেলার এই মরুময়তা ঠেকাতে শুভসংঘের এই উদ্যোগ লালপুরবাসীকে আশা জাগাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলের পরিচালনা কমিটির উপদেষ্টা আব্দুল ওয়াদুদ, সভাপতি জালাল উদ্দিন বাবু, সাধারণ সম্পাদক রাশিদুল ইসলাম, অভিভাবক সদস্য আবু তালেব, সদস্য রফিকুল ইসলাম, গোলাম সরোয়ার মিলন, স্কুলের শিক্ষিকা, ইউপি সদস্য এমদাদুল হক ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
লালপুর উপজেলা শুভসংঘের সভাপতি বলেন, “আমরা শুধু পরিকল্পনা করিনি, আমরা গাছ লাগিয়েছি, মানুষকে উৎসাহ দিচ্ছি, প্রচারণা চালাচ্ছি। উষ্ণতম এই ভূমিকে শীতল করতেই আমাদের এই পদক্ষেপ। শুভসংঘ প্রমাণ করেছে—চাইলেই পরিবর্তন সম্ভব। এই জনপদে সবুজের পরশ ছড়াতে এবার ‘করবো নয়, করেছি’ মানসিকতা নিয়ে মাঠে নেমেছি আমরা।
স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, “আমার জীবনে এমন উদ্যোগ আগে দেখিনি। ছেলেরা শুধু পোস্ট দেয় না, বাস্তবে গাছ লাগায়—এইটাই তো আসল পরিবর্তন।”
ইউপি সদস্য এমদাদুল হোক বলেন, “আমরা লালপুরের সন্তান। আমাদের দায়িত্ব এখানকার প্রকৃতি ও জনজীবনকে বাঁচানো। লালপুর দেশের উষ্ণতম এলাকা—এটা এখন শুধু তথ্য নয়, বাস্তব অভিজ্ঞতা। বসুন্ধরা শুভসংঘের সাথে এক হয়ে আমরা সবাই গাছ লাগাই, সবুজে ঢেকে দেই আমাদের লালপুরকে।”
বসুন্ধরা শুভসংঘের উপদেষ্টা আবদুল ওয়াদুদ বলেন, উষ্ণতম স্থান লালপুরকে বসবাসের উপযোগী রাখতে গাছ লাগানোর বিকল্প নেই। ফারাক্কা বা যে সমস্যার কথাই বলি এই উষ্ণতার বলি হচ্ছে এখানকার শিশু থেকে বৃদ্ধরা।
এই ধরনের উদ্যোগ পরিবেশ রক্ষায় এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্যে সচেতনতা তৈরিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আয়োজকরা মনে করেন। এসময় তারা সকলকে ফাঁকা জায়গায় ও বাড়ির আঙ্গিনায় অন্তত দু'টি করে বৃক্ষরোপণের আহ্বান জানান।
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ